The news is by your side.

বাজারে মুরগি-সবজির দাম লাগামহীন

0 170

ব্রয়লার মুরগির দাম আরও চড়া। গত সপ্তাহের তুলনায় আমিষজাতীয় খাদ্যপণ্যটি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। বাজারে শীতকালীন সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলেও দাম অনেক বেশি। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ব্রয়লার আর সবজির চড়া দামে ক্রেতারা বেশ হতাশ। বাজারে কার্যত খবরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতা সাধারণের।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে সদাই কেনার পর বেসরকারি চাকরিজীবী সাফায়াত বলেন, এখন শীত মৌসুম। এ সময় সবজির কেজি বিক্রি হওয়ার কথা ২০ থেকে ৩০ টাকায়। কিন্তু কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। বাজারে সরকারের কোনো নজরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা যে যার মতো দাম নিচ্ছেন।

২০০ টাকা কেজি মুরগি হলে তো কেনা কষ্টকর– এমন বক্তব্য একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক হোসেনের। গতকাল তেজকুনিপাড়া থেকে সদাই কেনার সময় তিনি বলেন, মেসে সপ্তাহে দু-একদিন মুরগি খাওয়া হয়। কিন্তু যে হারে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন, তাতে খাওয়া না কমিয়ে উপায় নেই।

খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার আলুর দাম বাড়তি থাকায় সবজির দাম বেশি। মাঝে এক দফা বৃষ্টির কারণে কৃষকরা ক্ষেত থেকে আলু তুলতে পারেননি। সবজিও তুলেছেন কম। এ ছাড়া অবরোধের কারণে পরিবহন ভাড়াও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সবজি, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যে।

দিন দশেক আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজকুনিপাড়া ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে দেখা গেছে, দাম বেড়ে এখন ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। কোথাও কেজিপ্রতি ২০০ টাকাও রাখছেন বিক্রেতারা। একইভাবে বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম। ৮ থেকে ১০ দিন আগে এ জাতের মুরগির কেজি পাওয়া যেত ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগে ডিমের দাম কমে ডজন নেমেছিল ১২০ টাকার ঘরে। ডজনে ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে।

বাজারে ভরপুর শীতের সবজি দেখা গেছে। বছরের এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে উল্টো চিত্র। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশির ভাগ সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকার মতো।

আলুর দাম কয়েক মাস ধরে বাড়তি। বাজারে নতুন আলু এসেছে। আকারভেদে এ আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে এ দর ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। নতুন আলুর সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি পুরোনো আলুর। বাজারে পুরোনো আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগেও এই আলুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই পদের বেগুনের দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শিমের দামও ২০ টাকা বেড়ে এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশি চড়েছে লাউয়ের দাম। প্রতিটি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে কেনা গেছে ৭০-৮০ টাকায়। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছিল। দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকার মতো বেড়ে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।

পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনও বড় কোনো সুখবর নেই। নতুন দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ক্রেতাদের ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।

মাছ-মাংসের বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া চাষের রুই আকারভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আর চাষের তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি কেনা যাচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে।

বাজারে এখনও চিনির সংকট কাটেনি। প্রতি কেজিতে ক্রেতাকে খরচ করতে হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া আগের মতোই চাল, ডাল, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থির রয়েছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.