এনআরসি নিয়ে ফের ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, আর কোথাও যা-ই হোক না কেন, বাংলা মানবিকতা ও সংস্কৃতির জায়গা। এখানে এনআরসি হবে না। কারো ভয় পাওয়ার দরকার নেই।
সংদের শীতকালীন অধিবেশনে বুধবারই এনআরসি নিয়ে ফের একবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সারা দেশে এনআরসি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার পরেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে এনআরসির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক বদমায়েশি করে এনআরসির নাম করে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করছে আপনাদের।
একটা কথা মনে রাখবেন, বাইরের আমদানি করা কোনো নেতার কথা বিশ্বাস করবেন না। সে হিন্দুই হোক, মুসলমানই হোক। বিশ্বাস করবেন আমরা যারা মাটিতে থেকে লড়াই করি, তারা আপনাদের পাশে আছি। বাংলায় এনআরসি হবে না। চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আপনারা প্রত্যেকে এ দেশের নাগরিক। একটা লোককেও এখান থেকে বিতাড়িত করতে দেব না।’
কংগ্রেস আমলে এনআরসির কাজ শুরু হলেও বিজেপির হাতে তার অপব্যবহার হচ্ছে বলে এ দিন অভিযোগ করেন মমতা। তার কথায়, ‘কংগ্রেস যখন আসামে ক্ষমতায় ছিল, তখন আসাম চুক্তির একটা পার্শ্বক্রিয়া হিসেবে এনআরসি ছিল। তার পরে বিজেপি এসে এটা করেছে। মনে রাখবেন, আগুন যখন লাগে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিষ্টান, তপশিলি, আদিবাসী কেউ রেহাই পায় না। দাঙ্গা লাগলে সবার ঘরে আগুন লাগে। বলেছিল একটা হিন্দুরও নাম বাদ যাবে না। আসামে দেখুন, ১৯ লাখের মধ্যে ১৪ লাখ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ হয়েছে। মুসলমান, পাহাড়ি, রাজবংশী, বিহারিদের নাম বাদ পড়েছে। তারা সবাই অস্থায়ী জেলে রয়েছেন। বাংলায় এসব হয় না, হবে না। বাংলা আপনাদের জায়গা, মানবিকতার জায়গা, মানুষের জায়গা, মা-মাটি-মানুষের জায়গা, সভ্যতা, সংস্কৃতির জায়গা। ভয় পাবেন না।’
এর আগেও একাধিক বার এনআরসির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে, দাঙ্গা বাধাতেই বিজেপি এনআরসি করতে উদ্যোগী হয়েছে বলে অভিযোগ তার।