‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। গণমাধ্যমসহ নানা জায়গায় শুনেছি যুক্তরাষ্ট্র ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে। কিন্তু আমি মনে করি এটি ঠিক নয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন এ কথা বলেন। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা বহুমাত্রিক। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়। আমরা যদি দ্বিপক্ষীয় অভিন্ন স্বার্থের নিরিখে দেখি তাহলেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। এটাই আমরা সরকার, গণমাধ্যমসহ সবাইকে জোর দিয়েই বলছি।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বাংলাদেশ নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে যাতে এ অঞ্চলে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। নিজের এবং এই অঞ্চলে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশটা সক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের ভূমিকার বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা মনে করি এ অঞ্চলের সব দেশের নিজেদের সুরক্ষা এবং অন্যদের সহায়তা করার সক্ষমতা থাকা উচিত। আমরা এ ধরনের টেকসই ও ইতিবাচক নিরাপত্তা কাঠামো দক্ষিণ এশিয়ায় দেখতে চাই। আইপিএসের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আগের সহযোগিতাগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীন ভবিষ্যতে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জোর খাটাতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, যেটা দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। আইপিএসের ক্ষেত্রে আমরা এ ধরনের আধিপত্যপাদী আচরণ দেখতে চাই না।
ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, আইপিএসের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখবেন বিশ্বের বাণিজ্যের বড় অংশটা হয় এই অঞ্চলজুড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও হচ্ছে এই অঞ্চল ঘিরে। তাই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবাধ ও মুক্ত ভবিষ্যৎ, অর্থনীতি এবং সমৃদ্ধির স্বার্থের বিষয়গুলোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, নিজের ও এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যভাবে বলতে গেলে এই অঞ্চলে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ (অপরাধ দমনে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা পালনকারী) দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন ভূমিকা রাখতে পারে সেটি করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।