রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে বাংলাদেশ আর্জি জানালে মায়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য শুরু করতে পারে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন ৭টি দেশের সংগঠন বিমস্টেক। সংগঠনের মহাসচিব এম শহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার কলকাতায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ও মায়ানমার, দুই দেশই বিমস্টেকের সদস্য। বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রস্তাব দিলে বিমস্টেক এগোনোর কথা ভাববে।’’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন— শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তার পক্ষে মস্ত ঝুঁকি রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। প্রতিবেশী দেশগুলির পাশাপাশি আসিয়ান, বিমস্টেকের মতো আঞ্চলিক সংগঠনগুলিকেও মায়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আর্জি জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। দিল্লি তো বহু দিন ধরেই নিরাপত্তার পক্ষে ঝুঁকি বলে মনে করে রোহিঙ্গাদের। মায়ানমার ছেড়ে আসা প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন শিবিরে রয়েছেন। ভারতেও এসেছেন কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। ঢাকার অভিযোগ, দু’বছরে এঁদের ফেরত নেওয়ার কোনও সদিচ্ছা মায়ানমার প্রশাসন দেখায়নি। বিমস্টেকের মহাসচিব শহিদুল ইসলাম নিজেও বাংলাদেশের কূটনীতিক। তিনি বলেন, ‘‘ঢেলে সাজানোর পরে বিমস্টেক এখন অনেক গতিশীল। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যোগাযোগ বৃদ্ধি থেকে নিরাপত্তা— নানা ক্ষেত্রে সক্রিয় হয়েছে বিমস্টেক। ঢাকা চাইলে রোহিঙ্গা নিয়েও তৎপর হতে পারে।’’
ভারত ও পাকিস্তানের মনোমালিন্যে সার্ক সংগঠনটি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বিমস্টেক (বে অব বেঙ্গল ইনিসিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিকাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন)-এর কাজের পরিধি বাড়িয়ে তাকে কর্মক্ষম করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। সদস্য দেশ ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড ও মায়ানমার। ‘নবরূপে বিমস্টেক’ নামে দু’দিনের একটি আলোচনা সভায় অংশ নিতে কলকাতায় এসেছেন সদস্য দেশগুলির কূটনীতিক ও সাংবাদিকেরা। উদ্যোক্তা অবজ়ার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর নীলাঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘চিন-মার্কিন বাণিজ্য-যুদ্ধের পরিস্থিতিতে অভিন্ন অর্থনৈতিক ব্লক হিসেবে সাফল্য পেতে পারে বিমস্টেক। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি তো হিমশৈলের চূড়া মাত্র।’’ বক্তারা জানান, অভিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব রয়েছে বিমস্টেকের। তার পরেও সংগঠনটি এত দিন কেন সে ভাবে পাখা মেলেনি, তা বিস্ময়ের।