লক্ষ্য যাঁর স্থির, অন্তরে যাঁর দেশমাতৃকাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্রত, তিনি যেকোনো বাধাকেই তুচ্ছজ্ঞান করে এগিয়ে যেতে পারেন। সেই অগ্রগামীদের একজন সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের তৃতীয় প্রজন্ম তিনি। বাংলাদেশের সমান বয়সী সজীব ওয়াজেদ জয়।
জন্ম ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায়। তিনি উচ্চশিক্ষিত, ভবিষ্যতে যেকোনো দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ভারত থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি এবং যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি ২৫০ তরুণ বিশ্বনেতার মধ্যে একজন হিসেবে সম্মানিত হন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হিসেবে তিনি অনেক আগে থেকেই রাজনীতিসচেতন। ২০০৮ সালের জুন মাসে শেখ হাসিনাকে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারাগার থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘মানুষের দায় মহামানবের দায়, কোথাও তার সীমা নেই। অন্তহীন সাধনার ক্ষেত্রে তার বাস। জন্তুদের বাস ভূমণ্ডলে, মানুষের বাস সেইখানে যাকে সে বলে তার দেশ। দেশ কেবল ভৌমিক নয়, দেশ মানসিক।
মানুষে মানুষে মিলিয়ে এই দেশ জ্ঞানে জ্ঞানে, কর্মে কর্মে। যুগ-যুগান্তরের প্রবাহিত চিন্তাধারায় প্রীতিধারায় দেশের মন ফলে শস্যে সমৃদ্ধ। বহু লোকের আত্মত্যাগে দেশের গৌরব সমুজ্জ্বল। যেসব দেশবাসী অতীত কালের তাঁরা বস্তুত বাস করতেন ভবিষ্যতে।
তাঁদের ইচ্ছার গতি কর্মের গতি ছিল আগামীকালের অভিমুখে। তাঁদের তপস্যার ভবিষ্যৎ আজ বর্তমান হয়েছে আমাদের মধ্যে, কিন্তু আবদ্ধ হয়নি। আবার আমরাও দেশের ভবিষ্যতের জন্য বর্তমানকে উৎসর্গ করছি। সেই ভবিষ্যেক ব্যক্তিগতরূপে আমরা ভোগ করব না।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আরেকটি নিবন্ধের ভাবার্থ এ রকম, সত্যের কোনো বিকল্প নেই। সত্যকে আশ্রয় করেই মানুষকে চলতে হয়। সত্যকে এড়িয়ে অসত্যকে আশ্রয় করে যাদের পথচলা, তাদের যাত্রাপথে একদিন বিরতি পড়বেই।
ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার টেনে নিয়ে যাওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে। ভারতের রাজনীতির পারিবারিক ধারায় লক্ষ করলে দেখা যায়, জওয়াহেরলাল নেহরুর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী তাঁর পিতার যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন। জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টো, বেনজিরের স্বামী ও ছেলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা যেমন সত্য, তেমনি শ্রীলঙ্কার বন্দর নায়েকে পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় লক্ষণীয়। ঠিক একইভাবে ১৯৮১ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতিতে অভিষেক। তারই ধারাবাহিকতায় সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণ কর্মীদের উজ্জীবিত করে নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছেন। নানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মা শেখ হাসিনার মতো আন্তরিক হৃদ্যতায় সাধারণ মানুষকে কাছে টানার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। তিনি সচেতন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সহজেই। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয় যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনিবার্য হয়ে উঠবেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ধারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। স্বাভাবিকভাবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয়। সংগত কারণেই তৃতীয় প্রজন্মের এই নেতৃত্বের প্রতি কেন্দ্রীভূত দেশের বেশির ভাগ মানুষের দৃষ্টি।
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘মানুষও আপন অন্তরের গভীরতর চেষ্টার প্রতি লক্ষ্য করে অনুভব করেছে যে সে শুধু ব্যক্তিগত মানুষ নয়, সে বিশ্বগত মানুষের একাত্ম।’
সজীব ওয়াজেদ জয় রবীন্দ্রনাথের সেই মানুষ, যিনি ‘ব্যক্তিগত নন’। ব্যক্তিগত সীমাকে ছাড়িয়ে তিনি পৌঁছে গেছেন মানুষের কাছে। অন্তরে যাঁর দেশমাতৃকাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্রত, তিনি যেকোনো বাধাকেই তুচ্ছজ্ঞান করে এগিয়ে যেতে পারেন। ইসক্রা থেকে যেমন জ্বলে ওঠে মশাল, তেমনি আজকের দিনের তারুণ্যই আগামী দিনের নেতৃত্বের পথটি দেখিয়ে দিতে পারে। যেমন দেখিয়ে দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। রাজনীতির উত্তরাধিকারসূত্রেই এখন রাজনীতির মঞ্চে তিনি।
আজ থেকে বহু বছর আগে জগদীশচন্দ্র বসুকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সেখান থেকে উদ্ধৃত করে বলি, ‘জয় তব হোক জয়!/স্বদেশের গলে দাও তুমি তুলে/যশোমালা তুমি অক্ষয়!/অবারিত গতি তব জয়রথ/ফিরে যেন আজি সকল জগৎ।/দুঃখ দীনতা যা আছে মোদের/তোমারে বাঁধি না রয়।’শুভ জন্মদিন সজীব ওয়াজেদ জয়।