The news is by your side.

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক যশোর রোড রক্ষায় কলকাতায় মানববন্ধন

0 112

কলকাতা অফিস

যশোর রোড সম্প্রসারণের কারণে শতাব্দী প্রাচীন গাছ কাটার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পাদদেশে একটি সভা ও মানববন্ধন করে ‘যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটি’ এবং মানবাধিকার সংগঠন এপিডিয়ার।

চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি যশোর রোডের সম্প্রসারণের জন্য সড়কের ভারতীয় অংশে শতাব্দী প্রাচীন গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ তুলে নেন সুপ্রিম কোর্ট। বহাল রাখেন ৩৬৫টি গাছ কাটার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়।

যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটির সদস্য বর্ণব বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এ রায়ে শতাব্দী প্রাচীন প্রায় চার হাজার গাছ কেটে ফেলা হতে পারে। এ সব গাছগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। গাছগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং শরণার্থীদের বহু ইতিহাস।

যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সৌভিক মুখার্জি বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আমরা মেনে নিতে পারছি না।

আমাদের দাবি, ওই গাছগুলোকে ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করা হোক। গাছ কেটে নয়, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে যশোর রোডের যানজট সমস্যার সমাধান করা হোক। তাছাড়া গাছের কারণে সুপ্রিম কোর্টে ৬০০টি মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা মনে করছি, এই তথ্য সঠিক নয়। তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই রায় পুনঃবিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’

মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সূর বলেন, ‘যশোর রোডের এই গাছগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাক্ষী। প্রশাসন চেষ্টা করছে গাছগুলো কেটে যশোর রোড সম্প্রসারণ ও পাঁচটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ নির্মাণের। এজন্য তারা চার হাজার গাছ কেটে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা মামলা করে বিষয়টি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোনও কিছুতেই কাজ হলো না। সুপ্রিম কোর্টের গ্রিন বেঞ্চ ৩৬৫টি গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন।’

২০১৭ সালে বারাসত থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত ১১২নম্বর জাতীয় সড়ক-যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য ৪ হাজার ৩৬টি গাছ কাটার পরিকল্পনা করে রাজ্য পূর্ত দপ্তর। গাছ কাটার ঘোষণার পর, প্রথম আদালতে মামলা করে এপিডিআর বারাসাত শাখা। পরে শিক্ষার্থীরা আদালতে আরও একটি মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৫ মে কলকাতা হাইকোর্ট যশোর রোডের গাছ কাটার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।

ওই বছরের ৩১ আগস্ট যশোর রোডে পাঁচটি ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য ৩৬৫টি গাছ কাটার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিত বন্ধ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।

আদালত জানায়, উন্নয়নের জন্য ৩৬৫টি গাছ কাটা যেতে পারে। তবে একটি গাছ কাটা হলে সেখানে আরও ৫টি গাছ লাগাতে হবে রাজ্যসরকারকে। তখন রাজ্যের হয়ে হাইকোর্টে গাছ কাটা প্রসঙ্গে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানান রাজ্যের তৎকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তাঁর দাবি ছিল, রাজ্যের এই মেগা প্রকল্প যশোর রোড সম্প্রসারণ ও ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করেছে। কিন্তু স্থগিতাদেশের কারণে আটকে রয়েছে প্রকল্পের বাস্তবায়ন।

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.