দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে দিনে তিন শিফটে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই উত্তোলন হয়েছে দুই হাজার ৭৩১ মেট্রিক টন কয়লা। এর মধ্য দিয়ে পুরোদমে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হলো।
খনি কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, তিন শিফটে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে।
রবিবার দুপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশলী সাইফুল বলেন, ‘শনিবার ভোর থেকে খনিতে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। দিনে তিন শিফটে দুই হাজার ৭৩১ টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। এ তিন শিফটে চীনা ৩০০ জন ও স্থানীয় বাংলাদেশি ২৯৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও দিনে তিন শিফটে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টন করে কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে।’
কয়লা খনিতে দেশ ও বিদেশি যে সকল শ্রমিকের শরীরে করোনা বা তার উপসর্গ নেই ওই শ্রমিকরা এই তিন শিফটে কয়লা উত্তোলন কাজে নিয়োজিত বলে জানান তিনি।
খনি সূত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তোলনকৃত ১৩১০ নম্বর ফেইজে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফেইজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর পরিত্যক্ত ফেইজের ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও নতুন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৩০৬ নম্বর ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। ওই সময় বলা হয়েছিল, নতুন ফেইজ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করে কয়লা উত্তোলনে সময় লাগবে প্রায় আড়াই মাস। পরে আগস্টের মাঝামাঝি কয়লা উত্তোলনের সময়ও নির্ধারণ করা হয়। তবে জাতীয় সংকট মোকাবিলায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা এবং পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় দ্রুত নতুন ফেইজের উন্নয়নকাজ শেষ করা হয়। ভূগর্ভে যন্ত্রপাতি বসিয়ে ২৭ জুলাই সকাল থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে উত্তোলন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ উত্তোলনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এরই মধ্যে খনিতে কর্মরতদের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরীক্ষায় ৫২ জন চীনা ও বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনা শনাক্ত হয়। এতে ৩০ জুলাই সকাল থেকে আবারও কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
পরে করোনা উপসর্গ নেই এমন শ্রমিক দিয়ে ৬ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা থেকে এক শিফটে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। বর্তমানে খনিতে শ্রমিকরা তিন শিফটে কয়লা উত্তোলন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।