ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের নাবলুসে গভীর রাতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলিরা। রোববার নাবলুসের হাওয়ারা নামক এক গ্রামে দুই ইসরাইলিকে গুলি করে হত্যা করেন এক ফিলিস্তিনি।
এ ঘটনার পর রোববার রাতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নাবলুসে ফিলিস্তিনের বাড়ি-গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ইসরাইলিরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলিরা অন্তত ৩০০টি হামলা চালিয়েছে। এই হামলাকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ‘সুসংগঠিত হত্যা সাধন এবং লুণ্ঠন’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।
প্রতিবেদন মতে, ইসরাইলি সেটেলারদের হামলায় সামিহ আল আকতাশ নামে ৩৭ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি যুবক নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনীর প্রহরায় নাবলুসের দক্ষিণে জাতারা গ্রামে হামলার সময় তার পেটে গুলি লাগে। পাঁচ ছেলে-মেয়ের বাবা সামিহ তুরস্ক ভূমিকম্পে উদ্ধার অভিযান শেষে কয়েকদিন আগেই দেশে ফিরেছিলেন।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাবলুসের দক্ষিণে হুয়ারা, জাতারা, বুরিন ও আসিরা আল-কিবলিয়া-এ চার গ্রামে তাণ্ডব চালায় ইসরাইলি সেটেলাররা। হামলায় এসব গ্রামের অন্তত ৩৯০ জন আহত হয়েছেন। বেশিরভাগই সেনাবাহিনীর ছোড়া টিয়ারগ্যাসে আহত হয়েছেন তারা।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর এ আঘাতের কারণে তার মাথার খুলি ফেটে গেছে। আরেকজনের মুখে রড দিয়ে মারা হয়েছে। হাওয়ারা গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম ওমর ইসরাইলিদের এ তাণ্ডবকে ‘বর্বর’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘গতকাল আমরা ঔপনিবেশিক বসতি স্থাপনকারীদের অপরাধের নতুন মাত্রা দেখলাম। যেখানে তারা সবকিছুতে হামলা করেছে। মানে দোকান, মানুষ, সুপার মার্কেট, বাড়ি, গাছ, গাড়ি, গাড়ির গ্যারেজ সব জায়গায় হামলা হয়েছে। তারা বাড়িতে প্রবেশেরও চেষ্টা চালিয়েছে।’
ওমর আরও বলেছেন, ‘তারা সেনাবাহিনীর দ্বারা শতভাগ সুরক্ষিত ছিল।’ পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা গাসান ডাগলাস আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, অন্তত ৩০টি বাড়ি ও ১০০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে অগ্নিসংযোগে কেউ নিহত হননি।
তিনি বলেছেন, ‘হামলার ব্যাপকতা এবং যে কম সময়ের মধ্যে এটি হয়েছে তা অকল্পনীয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এ হীন অপরাধের ‘সহযোগী’ ছিল ইসরাইলি সেনারা।