প্রবাসী আয় বাড়াতে বিশেষজ্ঞদের উদ্ভাবনী পরামর্শ চাইলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ সোমবার সোনারগাঁও হোটেলে পিএফএম সামিট-২০২৩ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই পরামর্শ চান।
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এতে সার্বিক অর্থনীতিতে ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে-এমন মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি, আমদানিতে ঘাটতি অর্থায়নে প্রধান ভূমিকা রাখছে রেমিট্যান্স।
পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষা ও টাকার প্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও রয়েছে এর অগ্রণী ভূমিকা। এছাড়া শুধু রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে অর্থনীতির অনেক সূচক সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আবার রেমিট্যান্স হঠাৎ করে কমতে থাকলে অর্থনীতির নানা সূচকে চাপ বেড়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অনেক লোক দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তবে সেই অনুপাতে রেমিট্যান্স বাড়ছে না।
তাই প্রবাসী আয় বাড়াতে কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে সরকার।
এজন্য সংশ্লিষ্টদেরকে উদ্ভাবনী পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। তার আশা, প্রবাসী আয় বাড়ানো গেলে অর্থনীতির চলমান সব সমস্যা সমাধান সম্ভব।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। আমদানি বাড়ছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোরও কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু রেমিট্যান্সের পাশাপাশি অন্যান্য উৎস যেমন-রপ্তানি, বিদেশি বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেবা প্রদান, পরামর্শক বাবদ ফি আয় বাড়ানো উচিত। তা না হলে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় চাপ বেড়ে যায়। যেটা বাংলাদেশে ২০০১ সালে হয়েছে। বর্তমানেও হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা বেড়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত ছয় বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রেমিট্যান্সে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ছিল আড়াই শতাংশ নেতিবাচক। ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
সূত্র জানায়, রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে টাকার প্রবাহ বেড়েছে, দরিদ্রতা কমেছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, বাজারে ভোগের চাহিদা তৈরি হয়েছে, এতে বেড়েছে উৎপাদন। সব মিলে জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে এর অবদান বেড়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য রাখতেও ভূমিকা রাখছে রেমিট্যান্স। আমদানির ঘাটতির অর্থায়নে রেমিট্যান্সের অবদান বেড়েছে।