মিয়ানমার থেকে আমদানি চালানে নিম্নমানের পেঁয়াজ আসার অজুহাত দেখিয়ে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালেও মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭০ টাকায়। যা কেজিপ্রতি ৪২ টাকায় কেনা হয়েছিল। একইভাবে ভারতীয় পেঁয়াজের দামও বাড়িয়ে দেওয়া হয় খাতুনগঞ্জে।
পেঁয়াজের বাজারে এমন অস্থিরতা মাথাচাড়া দিতেই খাতুনগঞ্জে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
মেসার্স আজমির ভাণ্ডার মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৪২ টাকা দরে কিনে ৭০ টাকা ও শাহ আমানত ট্রেডার্স ৬৫ টাকা করে বিক্রি করায় উভয় আড়তদারকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সর্তক করা হয়েছে যদি আবার এরকম ঘটনার প্রমাণ মেলে তাহলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে পেঁয়াজ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪২ টাকায় কেনা হয়েছে। গাড়িভাড়া এবং নিম্নমানের পেঁয়াজের দামও সমন্বয় করলে পাইকারিতে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৫০-৫২ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু আমদানিকারক ও আড়তদারেরা এমনভাবে প্রচার চালাচ্ছেন যে, মিয়ানমার থেকে আসা সব পেঁয়াজই পচা। এটা দাম বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম কারসাজি।’
অভিযানের সময় দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন কমিশন এজেন্টের নাম পান ম্যাজিস্ট্রেট। এদের মধ্যে কায়সার সওদাগর, এয়াকুব সওদাগর এবং রফিক সওদাগরের খোঁজে প্রতিষ্ঠানে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। কমিশন এজেন্টদের তথ্য র্যাব ও পুলিশকে দিয়ে তাদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকজন কমিশন এজেন্টের নাম পেয়েছি। ব্যবসায়ী সমিতির কাছে আমদানিকারকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চেয়েছি। তারা সেটা দেওয়ার পর আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। তারা কি পরিমাণ পেঁয়াজ কত দামে আমদানি করছে এবং বাজারে কত দামে সরবরাহ করছে সেটা আমরা যাচাইবাছাই করে দেখব। এছাড়া গোয়েন্দা নজরদারিও থাকবে।’
অভিযানের পর মিয়ানমার থেকে কেনা প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ভারতের পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর খাতুনগঞ্জে অভিযানের সময় পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা। অভিযানের পর পাইকারি ও খুচরায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছিল। চলতি সপ্তাহে আবার বাড়তে শুরু করে।