জেল থেকে ৪০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছিল ধর্ষণের অপরাধী স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিমকে। মুক্তি পেয়েই নিজের মিউজিক ভিডিয়ো প্রকাশ করলেন তিনি। দীপাবলির রাতে মুক্তি পাওয়া সেই ভিডিয়ো ইউটিউবে হিট তালিকায় ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়ে ফেলেছে।
২৪ ঘণ্টায় বহু মানুষ দেখেছেন ওই মিউজিক ভিডিয়ো। এক দিনে ৪২ লক্ষ ভিউ হয়েছে ভিডিয়োটির। যদিও প্যারোলে মুক্তি পাওয়া গুরমিত সেখানেই থেমে থাকেননি।
ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন ২০১৭ সালে। তার পর থেকে জেলেই রয়েছেন তিনি। তবে গত ৫ বছরে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন ৫ বার। এর মধ্যে এ বছরই জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে দু’বার জেল থেকে বেরিয়েছিলেন। কখনও পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে, কখনও আবার নিজের আশ্রমে থাকবেন বলে এক মাসের কাছাকাছি ছুটি নিয়েছেন।
জেল থেকে বেরনোর পর জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছে গুরমিতকে। এ বারও তেমনই লম্বা ছুটি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। আর এ বার বেরিয়ে তিনি প্রকাশ করলেন নিজের মিউজিক ভিডিয়ো। যার তারকা থেকে স্রষ্টা সবই গুরমিত নিজে। গানের কথা, সুর, নির্দেশনাও তাঁরই।
গুরমিত এর আগে গান লেখেননি তা নয়। এর আগে ছ’টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। শেষেরটি হয়েছিল ২০১৪ সালে। নাম, হাইওয়ে লাভ চার্জার। মুক্তি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে ৩০ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছিল অ্যালবামটির। সেই গুরমিতের মিউজিক ভিডিয়ো ইউটিউবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যাতে একেবারেই অবাক হচ্ছেন না তাঁর ভক্তরা।
গুরমিত অবশ্য জানিয়েছেন, মিউজিক ভিডিয়ো হলেও, তাঁর নতুন গানটি আসলে ভজন, ঈশ্বরের নামগান। স্বঘোষিত ‘বাবা’ এ-ও বলেছেন যে, তাঁর হাতে এখনও আরও ৮০০টি এমন ভজন তৈরি আছে। ভক্তরা সেই ভজনও শুনতে পাবেন। তবে তাদের ধৈর্য ধরতে হবে। সময় মতো ভজনগুলি তাঁদের হাতে তুলে দেবেন গুরমিত।
গুরমীত এই ঘোষণা করেছে তাঁর একটি সৎসঙ্গ শিবিরেই। প্যারোলে মুক্তি পাওয়া ধর্ষণের অপরাধী ‘বাবা’র সৎসঙ্গ নিয়েও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছুটিতে উত্তর প্রদেশে নিজের বারনাওয়া আশ্রমেই থাকছেন গুরমিত। সেখান থেকেই নিয়মিত অনলাইনে আয়োজন হচ্ছে সৎসঙ্গ শিবিরের। উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার বহু বিজেপি নেতা সেই শিবিরে নিয়মিত থাকছেন বলেও দাবি করেছে কংগ্রেস। রবিবার বিজেপির এক বিধায়কও হাজির ছিলেন সেখানে।
২০০২ সালে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে গুরমিতের বিরুদ্ধে। সেই অপরাধেই ২০১৭ সালের ২৮ অগস্ট তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। পরে এক সাংবাদিককে খুন করার অপরাধে ২০১৯ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় স্বঘোষিত গুরুকে।