পোশাকশিল্পে যে শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে, তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক।
রুবানা হক বলেন, করোনার কারণে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে উৎপাদন চালাতে হলে কারখানাগুলোর পক্ষে শ্রমিক ছাঁটাই ছাড়া উপায় থাকবে না। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা, কিন্তু করার কিছু নেই। অবশ্য হঠাৎ পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই শ্রমিকেরাই অগ্রাধিকার পাবেন। তিনি বলেন, করোনার কারণে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হওয়ায় পোশাক খাতে ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতির ধাক্কা এসেছে।
এদিকে পোশাকশ্রমিকদের করোনাভাইরাস শনাক্তে গাজীপুরের চন্দ্রায় ডা. ফরিদা হক মেমোরিয়াল ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতালে আধুনিক পিসিআর ল্যাব স্থাপন করেছে পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার ল্যাবটি উদ্বোধন করা হয়। একই সঙ্গে আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক।
প্রশ্নের জবাবে রুবানা হক বলেন, এপ্রিল ও মে মাসে যেসব কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিজিএমইএ। তার বাইরে না। কারণ, ছাঁটাই অথবা কাজ দেওয়া এ দুটিই করতে হয় উদ্যোক্তাদের। তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে বড় একটা সহায়তা পেয়েছিলেন মালিকেরা। সেটি জুন মাসে শেষ হবে। তবে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা চালিয়ে শতভাগ কর্মী রাখা উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
ভিডিও কনফারেন্স ও অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সাংসদ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রমুখ।
বিজিএমইএ জানায়, গাজীপুরের চন্দ্রায় স্থাপিত ল্যাবে প্রতিদিন ৪০০ নমুনা পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়া টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ল্যাব স্থাপনের পাশাপাশি আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিজিএমইএর সদস্য বড় কারখানার অনেক জায়গা রয়েছে। তারা নিজেদের শ্রমিকদের জন্য আইসোলেশন ইউনিট করতে পারে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক পোশাকশিল্পের মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘করোনা পরীক্ষা না করালে অনেকে আক্রান্ত হবেন। তাতে শিল্প চালানো মুশকিল হয়ে যাবে। তাই প্রয়োজন হলে আরও ল্যাব স্থাপন করুন। আক্রান্ত রোগীকে রাখার জন্য কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন ইউনিট করুন।’