পূর্বাচলে ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা ১ হাজার লিটার পানির দাম ২০ টাকা
৩০ জানুয়ারি প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় পানির দাম নির্ধারণ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আবাসিক সংযোগে ১ হাজার লিটার বা এক ইউনিট পানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের পানির মূল্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করে সরবরাহকৃত পানির এই মূল্য দেশে সবচেয়ে বেশি। দেশের পৌরসভাগুলো ভূগর্ভের পানি উত্তোলন করে ১০-১৪ টাকা হারে আর ঢাকা ওয়াসা ভূগর্ভ ও নদীর পানি শোধন করে আবাসিকে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা ও বাণিজ্যিকে ৪২ টাকা ইউনিট হারে সরবরাহ করে।
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘পানির উচ্চমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মূল্য আরও বাড়বে, যখন এর সঙ্গে পয়ঃনিষ্কাশনের মূল্য যোগ করা হবে। এখনই ২০ টাকা করা হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে আরও বাড়বে; যখন প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাবে আর রাজউককে পানি উত্তোলন করতে আরও নিচে যেতে হবে।’
পূর্বাচলের ভেতরের বালু ও ধলেশ্বরী নদীর পানি ব্যবহার না করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনও অযৌক্তিক মনে করেন এই স্থপতি। তার মতে, ‘পরিবেশ বিপর্যয় এড়াতে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করার নীতি রাজউকের প্রকল্প নেওয়ার বহু আগেই নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমাদের খাবার পানি বাদে অন্যান্য কাজে ব্যবহারে সুপেয় পানি দরকার নেই। কিন্তু রাজউক এ নীতিমালাবিরোধী কাজ করেছে।’
পূর্বাচলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে তিনটি গভীর নলকূপ স্থাপন ও ৪০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩০ জানুয়ারি প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর ১, ২, ৩ ও ৪-এর আংশিক সেক্টর এলাকায় গ্রাহকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পানির সংযোগ দেওয়া হবে।
পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প পরিচালক মো. বদিউল আলম জানান, তারা এখন পর্যন্ত মাত্র ২০টি পানি সরবরাহ সংযোগের আবেদন পেয়েছেন।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পূর্বাচল নতুন শহরে প্রথম ধাপে রাস্তা বরাবর ৪০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন নির্মাণের কাজ শেষ।
এটি উচ্চ মূল্য কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে কাজ করা হয়েছে। আর ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই দাম নির্ধারণ করেছি। তারা অনেক আগে ১৫ টাকা দাম নির্ধারণ করেছে, এটা এখন যেকোনও সময় পরিবর্তন হতে পারে। আমরা তো এখন নির্ধারণ করলে খুব তাড়াতাড়ি পরিবর্তন হবে না। আমরা এটা নির্ধারণ করেছি ১ থেকে দেড় বছরের মধ্যে আর যেন পরিবর্তন না করতে হয়।’
বদিউল আলম বলেন, ‘আমাদের এখানে বড় ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। আমরা সবার জন্য পানি প্রস্তুত করছি। কিন্তু পূর্বাচলে এখনও খুব বেশি বসতি গড়ে ওঠেনি। এটা যদি চিন্তা করেন, তাহলে কিন্তু ভর্তুকি দিয়েই প্রকল্পটি চালাতে হবে। আমাদের হিসাবে মাত্র ২০ জনের সংযোগ নেওয়ার প্রস্তুত রয়েছেন।’
বর্তমান সরবরাহ লাইনের আওতায় প্রায় ৩ হাজার প্লট মালিক পানির আওতায় আনা যাবে। আর পূর্বাচলে বিভিন্ন আকারের মোট ২৭ হাজার ১৭১টি প্লট এবং ৬২ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট করার সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে আবাসিক প্লট রয়েছে ২৫ হাজার ১৬টি।