ভুয়া ও কাগুজে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫১ কোটি ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাতের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাষ্ট্রীয় এ সংস্থার উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার বাদী হয়ে গত রোববার চারটি ও সোমবার অন্য মামলাটি করেন। দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বোর্ডের সদস্যরা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার-পূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং করেন।
দুদক সচিব জানান, এসব মামলায় পি কে হালদার ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক টেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক এমডি মো. রাশেদুল হক, নয় জন বোর্ড সদস্য, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পি কে হালদারের অত্মীয় স্বজন ও সহযোগীসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া পি কে হালদারের সহযোগীদের অর্থ লোপাটের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৮৩ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে।
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন পি কে হালদার।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়দের, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি
এদিকে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পি কে হালদারের দুই সহযোগী পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হককে ৫ দিনের রিমান্ডে দেন আদালত।