The news is by your side.

পাকিস্তানে সেনাপ্রধানের সঙ্গে লড়াইয়ে ইমরান খান!

0 172

ক্যারিশমাটিক ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক নেতা ক্ষমতা থেকে তাকে উৎখাতের প্রতিবাদে নিবেদিত সমর্থকদের নিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন।

অপর জন নীরব জেনারেল, গোপনে যিনি প্রচণ্ড ক্ষমতাধর এবং একটি সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাকিস্তান শাসনে যে বাহিনী চূড়ান্ত কথা বলে।

পাকিস্তানের সরকার ও সেনা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ইমরান খানের ১৩ মাসের বিরোধ দেশটিকে একটি রাজনৈতিক সংকটের দিকে নিয়ে গেছে। এই সংকট ক্রমশ জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে পরিণত হচ্ছে।

তাদের এই বিরোধের নেপথ্যে কী সেটা কেউ-ই প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ইমরান খানের পরিবারের দুর্নীতির হুমকি দিয়েছিলেন জেনারেল মুনির। এর ফলে ২০১৯ সালে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর দায়িত্ব থেকে তাকে অপসারণ করেন ইমরান।

যে দেশে সেনাবাহিনীকে প্রকাশ্য আলোচনায় কথা বলা হয় শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে, সেই দেশে সম্প্রতি ইমরান সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, জেনারেল মুনির ‘গণতন্ত্র, সংবিধান ও মৌলিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছেন’।

গত সপ্তাহে ৭০ বছর বয়সী এই নেতা বলেছেন, সেনাপ্রধান মূলত নিজেকে রক্ষায় দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছেন।

২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী এই নেতা টানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করে চলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত, শীর্ষ জেনারেল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের একটি ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। এই অভিযোগের পক্ষে সামান্য প্রমাণ হাজির না করেও ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

মুখ বন্ধ রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি আগাম নির্বাচনের দাবিতে একাধিক বড় বড় সমাবেশ করেছেন। তাকে হত্যারও চেষ্টা হয়েছে। দায়ের করা হয়েছে দেড় শতাধিক মামলায়। এই মাসের শুরুতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।

জেনারেল মুনির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী বুশরা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে চান। ২০১৯ সালের জুন মাসে তাকে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আইএসআই-এ তার নিয়োগ তিন বছরের জন্য হলেও মাত্র আট মাসের মাথায় তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই সময় তাকে সরানোর বিষয়ে সেনাবাহিনী কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি। জেনারেল মুনিরকে পাঞ্জাবের একটি আর্মি কর্পসের দায়িত্বে পাঠায় সেনাবাহিনী।

এই মাসের শুরুতে গ্রেফতার হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশে মুক্তির পর ছোট জয় পেয়েছেন ইমরান। তবে উইলসন সেন্টার থিংক ট্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, এটি সাময়িক। সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিজেদের বিরত রাখবে, এতে সংশয় রয়েছে। তারা ইমরানের ক্ষমতায় ফেরার কোনও সুযোগ রাখতে চায় না। এর অর্থ হলো আবারও তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে অথবা তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।

কুগেলম্যান আরও বলেছেন, সেনাপ্রধানকে অভিযুক্ত করার ফলে প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর নেতা ও জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যকার লড়াই শিগগিরই সামনে চলে আসবে। ইমরানের জন্য তা কঠিন হবে। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি সেনাবাহিনী। এমন লড়াইয়ে সামরিক শক্তি জয় পায়। কিন্তু গত কিছু বছর ধরে সশস্ত্রবাহিনী এমন রক্ষণাত্মক অবস্থায় থাকার কারণে এই সংঘাত কোন দিকে মোড় নেবে তা ধারণা করা মুশকিল।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.