পাকিস্তানের অষ্টম তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন সাবেক সিনেটর আনোয়ার-উল-হক কাকার। ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান (সিওএএস) অসীম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল নাদিম রাজা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে টিভিতে প্রচারিত অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেন আনোয়ার-উল-হক কাকার। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পায় পাকিস্তান। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ রোববার মধ্যরাতে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার আস্থা আছে।’
শপথ গ্রহণের পর কাকার প্রথমে দেশ পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। ধারণা করা হচ্ছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে কয়েক মাস লাগতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার নিয়ম রয়েছে। এজন্যই গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে দেয় শাহবাজ শরিফ।
অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের আগে সিনেটর পদ ছাড়েন আনোয়ার-উল-হক কাকার। শপথ গ্রহণের আগে সংসদের উচ্চকক্ষ থেকে কাকারের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সানজারানি। সিনেট সচিবালয় থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কাকারের পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করা হয়।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন বলেই কাকার তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। যেহেতু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা তার দায়িত্ব ছিল, যার জন্য তাকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে, তাই তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর পর থেকে দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। তোশাখানা দুর্নীতির অভিযোগে গত সপ্তাহে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পাশাপাশি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে পিটিআই প্রধানকে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর অভিযান চালিয়েছে। এ সময় ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দমন-পীড়নের মাধ্যমে দলটির তৃণমূলকে দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারকে নিয়োগের বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তারপর প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারকে নিয়োগের অনুমোদন দেন। সংবিধানের ২২৪-এ অনুচ্ছেদের অধীনে তিনি এ নিয়োগের অনুমোদন দেন।
মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ৩ দিন আগে গত ৯ আগস্ট রাতে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।