১৫ অগস্ট, ভারতের স্বাধীনতা দিবস। জন গণ মন অধি নায়ক… সুর ভেসে আসছে। ভারত নয়, জায়গাটা পাকিস্তান। আকাশে নীল চাপ চাপ মেঘ। সেই রঙেই তুলি ডুবিয়ে নীচে গাঢ় করে আঁকা পাহাড়। এক কোণে মেঘ সরে যেতে সাদা আকাশ। উজ্জ্বল। নীচে বিস্তীর্ণ উপত্যকা। সবুজ গাছগাছালি হাওয়ায় দুলছে। ক্যানভাসটা আসলে জীবন্ত। ঠিক মাঝখানে সাদা পোশাকে গোলাপি আভা নিয়ে বিরাজ করছেন পাকিস্তানি রবাবশিল্পী সিয়াল খান। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় কেঁপে উঠছে যন্ত্রীর তার। বাজাচ্ছেন, ‘প্রেমহার হয় গাঁথা…’।
শিল্পীর ইতিহাসের ক্ষত বইছে কি হৃদয়ের মানচিত্রে । দিনটা যে খালি হাতে কাটিয়ে দেওয়া যায় না। তাই রবাব নিয়ে বসেছেন সিয়াল। সুরই সেই মাধ্যম যার মধ্যে দিয়ে না বলা কথা, আক্ষেপ, সান্ত্বনা পৌঁছে যেতে পারে সহজে। সীমান্তের ওপারের বন্ধুদের কাছে সেই উপহারই পৌঁছে দিলেন ।
ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার। সকাল সকাল উপহার হয়ে এল সিয়ালের বাজানো রবি ঠাকুরের গান। সেই গানের আরও এক পরিচয়, সেটি ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। তবে সিয়ালের রবাবে সে গান কেবল সুর হয়ে বাজল। তাতে মিলেমিশে গেলেন শিল্পী। গানের ভিডিয়ো পোস্ট করে উপরে লিখলেন, ‘সীমান্ত পেরিয়ে আমার সমস্ত দর্শকের জন্য রইল এই উপহার।’ লেখাশেষে ভারত-পাকিস্তানের পতাকা দু’টি পাশাপাশি রাখা।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দির জেলার বাসিন্দা সিয়াল। পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হলেও সঙ্গীতের প্রতি তাঁর বরাবরের আগ্রহ। আর ভালবাসেন ঘুরতে। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গীত শোনেন। জ্ঞান আহরণ করেন। দেশি কাওয়ালি, পশ্চিমী সঙ্গীতের পাশাপাশি প্রায়ই তাঁর রবাবে বলিউডের জনপ্রিয় গানের সুর শোনা যায়।