অ্যারন ফিঞ্চ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত ব্যাটিং এবং প্যাট কামিন্স আর লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার আগুন ঝরানো বোলিংয়ে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ৮০ রানের এই জয়ে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বুধবার আবুধাবিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এই মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও অজি বোলারদের কাছে রীতিমত খাবি খেয়েছে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। ফলাফল ৪৪.৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে সব উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের সংগ্রহ মাত্র ১৮৬।
অজিদের ছুড়ে দেওয়া ২৬৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। তিন ব্যাটসম্যানই কামিন্সের শিকার। তবে একপ্রান্ত আগলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানের ওপেনার ইমাম-উল-হক। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের বলে এলবিডব্লিউ’র শিকার হয়ে তার ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটে।
পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের মিডল অর্ডার কিছুটা লড়াই উপহার দিলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং অধিনায়ক শোয়েব মালিক (৩২), উমর আকমল (৩৬) ও ইমাদ ওয়াসিমের (৪৩) ইনিংসগুলো পাকিস্তানের হতাশা আরও বাড়িয়েছে। কারণ তারা কেউই সেট হয়ে ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে সক্ষম হননি। মূলত পাকিস্তানের ইনিংসের লেজ মুড়িয়ে দিয়েছেন জাম্পা। শেষের চার ব্যাটসম্যানই তার শিকার।
বল হাতে সব অজি বোলারই নিয়ন্ত্রিত বোলিং উপহার দিয়েছেন। কিন্তু উইকেট শিকারের দিক থেকে কামিন্স আর জাম্পাই সেরা। ৮ ওভারে ২৪ রান খরচে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে মূল কাজটা সেরে রেখেছিলেন কামিন্স। আর ৯.৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাকি কাজ সারেন জাম্পা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। ফর্মে থাকা উসমান খাওয়াজাকে ম্যাচের প্রথম ওভারেই বোল্ড করে দেন বাঁহাতি পেসার উসমান শিনওয়ারি। আরেক বাঁহাতি পেসার জুনাইদ খানের শিকার তিনে নামা শন মার্শ। ২০ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় ২ উইকেট।
পিটার হ্যান্ডসকমকে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন ফিঞ্চ। আক্রমণের সহজাত প্রবৃত্তি দমিয়ে রেখে ফিঞ্চ মন দেন এক পাশ আগলে রাখায়। রান দ্রুত বাড়াচ্ছিলেন হ্যান্ডসকম। ৮৪ রানের জুটি ভাঙেন হারিস সোহেল। ৪৩ বলে ৪৭ করে আউট হন হ্যান্ডসকম।
মিডল অর্ডারে মাকার্স স্টয়নিস দাঁড়াতে পারেননি। ম্যাক্সওয়েল উইকেটে যাওয়ার পর নতুন গতি পায় ইনিংস। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান ফিঞ্চ এগিয়ে যাচ্ছিলেন হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরির পথে।
তবে দলের প্রয়োজনের কাছে শেষ পর্যন্ত নিজের মাইলফলক ঝুঁকিতে ফেলেন ফিঞ্চ। ৪২ তবে ওভারে ইয়াসির শাহকে ছক্কা মারতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক আউট হন ১৩৬ বলে ৯০ রান করে।
অস্ট্রেলিয়ার রান তখনও আড়াইশ হওয়া নিয়ে শঙ্কা। ম্যাক্সওয়েলের দারুণ সব শটে দল তুলে ফেলে আরও বেশি রান। ২৭ রানে তাকে জীবন দেওয়ার চড়া মূল্য দিতে হয় পাকিস্তানকে। এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৯০ রান।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন উসমান শেনওয়ারি, জুনায়েদ খান, ইয়াসির শাহ, ইমাদ ওয়াসিম ও হারিস সোহেল।
বল হাতে পাকিস্তানের রানের চাকায় বাধ দেওয়ার পাশাপাশি ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন প্যাট কামিন্স।
এই জয়ে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।