কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের হাড়হিম করা নতুন বেশকিছু তথ্য সামনে এসেছে। কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যার পর মরদেহের চামড়া ছাড়ানো হয়। এরপর ৮০ টুকরো করা হয় তার দেহ। যাতে করে পরিচয় শনাক্ত না করা যায়।
এ কাজের বিনিময়ে ‘কসাই’ জিহাদ পেয়েছেন ৫০০০ রুপি। খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার জিহাদ ভারতীয় তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছে।
কলকাতা পুলিশ সূত্র বলছে, লাশের টুকরোগুলো যেহেতু জলাশয়ে ফেলা হয়েছে তাই সব অংশ উদ্ধার করা কঠিন।
পুলিশের গোয়েন্দাসূত্র বলছে, এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিহাদ জানিয়েছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তকারীদের নজরে এসেছেন বাংলাদেশের নাগরিক শিলাস্তি রহমান নামে এক তরুণী। খুনের দিন সম্ভবত তিনিই সম্ভবত এমপি আনারকে নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই শিলাস্তিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ঢাকা পুলিশ।
ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত সিয়াম ও জিহাদ জানিয়েছেন, নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে প্রথমে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করা হয় আনোয়ারুলকে এবং পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী বস্তু দিয়ে সাংসদের মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। তার পর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। খুনের পর হাড়, মাংস পৃথক করে হলুদ মাখিয়ে দেহের টুকরোগুলো নানা জায়গার জলাশয়ে ফেলা হয়।
তদন্তে জানা যায়, ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্কে কিছু বিষয়ে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের ওপর ক্ষোভ ছিল তার বন্ধু ও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের। ২০০ কোটি টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়। আগেও একাধিকবার এমপি আনারকে খুনের হুমকি দিয়েছিল শাহিন।
সবশেষ গুলশান এবং কলকাতার নিউমার্কেটে দুদফায় তৈরি করা হয় হত্যার ব্লুপ্রিন্ট। এরপর গত ১২ মে এমপি আনার কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্যাংয়ের সদস্য শিলাস্তির মাধ্যমে তাকে ‘হানিট্র্যাপে’ ফেলা হয়। এরপর নিউটাউনের ফ্ল্যাটে এনে ১৩ তারিখ রাতে আনারকে হত্যা করা হয়।