পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও মুক্তি পেলো ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’
জটিলতা এড়াতে ঘোষণা ছাড়াই মুক্তি পেয়েছে সালমান শাহকে ঘিরে ওয়েব সিরিজ
চার বছরে মাত্র ২৭ সিনেমা করে যিনি অজেয় হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রে, তিনি সালমান শাহ্। মাত্র ২৬ বছর বয়সে অস্বাভাবিক এক মৃত্যুতে থেমে যায় এই অমর নায়কের পথচলা। সেটি কি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা; সেই জট খোলেনি ২৭ বছরেও।
বিস্ময়কর তথ্য হলো, মূলত সেই মৃত্যু রহস্যের জট খোলার চিত্রনাট্য নিয়ে ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই নির্মাণ করেছে ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’। প্ল্যাটফর্ম ভারতীয় হলেও এর নির্মাতা-অভিনেতা বাংলাদেশী। সিরিজটি নির্মাণের ঘোষণা প্রকাশের পর সালমান শাহ পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আপত্তি, পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিশ। বিশেষ করে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী ও মামা আলমগীর কুমকুম এ বিষয়ে জোর আপত্তি জানান।
সেই আইনী জটিলতা এড়াতে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ২ মার্চ রাতে (বৃহস্পতিবার) মুক্তি দেওয়া হয়েছে তানিম রহমান অংশু পরিচালিত আট পর্বের এই ওয়েব সিরিজটি।
‘বুকের মধ্যে আগুন’ কোন তারকার মৃত্যু রহস্য এই সিরিজের উপজীব্য, যদিও কোন নাম অবশ্য উল্লেখ করেননি নির্মাতা তানিম রহমান অংশু। তবে সিরিজটি যারা দেখেছেন তাঁরা দাবি করছেন, সালমান শাহর মৃত্যু রহস্যে ঘিরে নির্মিত হয়েছে এটি। যেখানে সালমান শাহের আদলে দেখা গেছে ইয়াশ রোহানকে, স্ত্রীর (সামিরা) মতো দেখা গেছে তমা মির্জাকে, নায়কের মা নীলা চৌধুরীর মতো লেগেছে তানিয়া আহমেদকে, রাজনীতিক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের গেটআপে তৌকীর আহমেদ, প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবয়বে তারিক আনাম খানকে।
মোটামুটি সালমান শাহ কেন্দ্রিক তৎকালীন সব চরিত্রকেই নির্মাতা পর্দায় হাজির করিয়েছেন কাছাকাছি গেটআপে। যেটি দেখে ৯০ দশকের দর্শক-নির্মাতা-শিল্পী-সাংবাদিকরা হুবহু মিল খুঁজে পাচ্ছেন সালমান শাহের জীবনের গল্পের সঙ্গে।
‘বুকের মধ্যে আগুন’ সিরিজে এএসপি গোলাম মামুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব; যিনি প্রিয় নায়কের মৃত্যুরহস্য প্রকাশ করবেন।
এই প্রসঙ্গে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
তবে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী জানালেন, এই বিষয়ে তিনি আবারও আইনের দ্বারস্থ হবেন।
নীলা চৌধুরী বলেন, ‘এটা যে আমার সন্তান এবং আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এরজন্য তারা আমার কাছ থেকে অনুমতি নিতে পারতো। নেয়নি। আমার কথা হলো, যে হত্যা রহস্য ২৭ বছরেও প্রকাশ করতে পারলো না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সেটা তারা কেমন করে নাটকের মাধ্যমে প্রকাশ করছে? তারা নাটক না বানিয়ে আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দিলেই তো আমরা জানতে পারতাম। ২৭টি বছর আমি লড়াই করছি খুনিকে ধরার জন্য, অথচ তারা নাকি নাটক দিয়ে সেটি দেখাবে! এটা হতে পারে? আমি আইনের কাছে যাবো তাদের বিরুদ্ধে।’
এদিকে হইচই-এ সিরিজটি প্রকাশের পর থেকে চারদিকে সাড়া পড়ে গেছে। কারণ, সিরিজের চরিত্রগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সকলেরই চেনা মুখ! যারা সুপারস্টার সালমানকে ঘিরে ছিলেন সেই সময়টাতে। যার মধ্য দিয়ে সালমানের সেই সময়কার জীবনের প্রায় সবটুকুই তুলে ধরেছেন অংশু।