নির্মলেন্দু গুণ
যারা বলেছিলো সম্ভব নয়…
দুরন্ত পদ্মার বুকে সেতু?
যাহ! অসম্ভব, এ অসম্ভব।
Its a political stunt.
এইডা হইলো মুজিবকন্যা
শেখ হাসিনার অর্থ-চুরির
এক পরিকল্পিত উৎসব।
কাজের কাজ কিছুই হবে না।
পদ্মাসেতুর এই জমকালো
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ আমি
তাদের হারিকেন জ্বালিয়ে খু্জঁছি।
যারা ভেবেছিলেন ‘পদ্মার ঢেউরে
শাসন করার নাই কেউরে….।’
পদ্মাসেতুর এই জমকালো
উদ্বোধনী-অনুষ্ঠানে আমি
সেইসব ভাববাদীদের খুঁজছি।
যারা বলেছিলেন বিশ্বব্যাংকের অনুগ্রহ এবং অর্থভিক্ষা ছাড়া অসম্ভব এই সেতুর কল্পনা–
সেতুর অর্থ ছাড় হওয়ার আগেই
দুর্নীতির অভিযোগে যারা
কানাডার কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন-,
যারা দেশের বিভিন্ন দরগায় মানৎ
করেছিলেন মোম ও সিন্নি,
যারা অন্তর থেকে প্রার্থনা করেছেন
‘এই সেতু না হোক, এই সেতু না হোক’।
পদ্মার অতলগহ্বরে এই সেতুর
পিলার ভেসে যাক–এই জমকালো উদ্বোধনী-অনুষ্ঠানে আমি আজ সেই ‘অনর্থবিদ’দের খুজঁছি।
আমাদের বিশেষ একজনের বিশেষ বান্ধবী, মেয়াদোত্তীর্ণ
মার্কিন ফার্স্ট লেডী হিলারী রডহ্যাম ক্লিন্টন! সরি ম্যাম, খুব সঙ্গতকারণেই
আমি আজ আপনাকেও খুঁজছি।
যিনি বলেছিলেন-“প্রিয় দেশবাসী,
আপনারা এই সেতুতে উঠবেন না,
এই সেতু ভেইঙ্গে যাবে।”
পদ্মাসেতুর এই জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি উনাকেও খুজঁছি।
বিশ্বব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে
আমরা আমাদের নিজেদের টাকায়,
৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ
পদ্মাসেতু তৈরি করেছি, ইনশাল্লাহ্।
আমরা দুরন্ত দুর্বার পদ্মাবতীর কণ্ঠে
পরিয়ে দিয়েছি এই স্বর্ণসেতুহার।
পদ্মাসেতু তুমি আর স্বপ্ন নও, বাস্তব।
এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে
আমরা পচ্চিমা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিলাম- –বাংলাদেশ পারে।
পদ্মাসেতু আমাদের মস্ত অহংকার।
আর অপেক্ষা কিসের?
যান, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে
এখন মহানন্দে, মহাসুখে,
চোখের পলকে হোন পদ্মাপার।
১৩ জুন ২০২২।