২০২০ সালে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বৈধ ফল পাল্টে দিতে পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘নানামুখী ষড়যন্ত্র’ করেছেন। এমনকি ওই ফল প্রত্যাখ্যান করে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন সংসদ ক্যাপিটলে তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টির সমর্থকদের হামলা-ভাঙচুর ও সহিংসতা বন্ধেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। হামলার ঘটনা একজনের জন্যই ঘটেছে, আর তিনি হলেন ট্রাম্প। ঘটনা তদন্তে গঠিত কংগ্রেসের ৯ সদস্যের কমিটি প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব উঠে এসেছে। খবর আলজাজিরার।
ক্যাপিটলে হামলার ১৮ মাস পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ৮৪৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের ওই কমিটি। এই তদন্তের শুনানিতে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্বাধীন কমিটি ১ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেয়। সেই সঙ্গে এ-সংক্রান্ত এক লাখের বেশি নথিও সংগ্রহ করে। সাক্ষাৎকার নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ট্রাম্পের অনেক ঘনিষ্ঠ সহকারী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও হামলায় অংশ নেওয়া সমর্থকরাও রয়েছেন।
প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় ওই হামলার আগে ট্রাম্পের নানা কর্মকাণ্ডের চিত্র। তাঁর এসব কর্মকাণ্ড সমর্থকদের ক্যাপিটলে ওই বিশৃঙ্খলায় প্রভাবিত করে বলে শুনানিতে জানান সাক্ষ্যদানকারীরা।
প্রতিবেদনের শেষে তদন্ত কমিটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বিদ্রোহ’ গণতন্ত্রকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছিল এবং ঝুঁকিতে ছিলেন মার্কিন আইনপ্রণেতারাও। এ নিয়ে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের বিদায়ী স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের একটি আহ্বান জানাচ্ছে। তা হলো- গণতন্ত্র নিরাপদ রাখতে এমন ব্যক্তিদের ভোট দিতে হবে, যারা সংবিধান রক্ষায় সচেষ্ট থাকবেন।
আট অধ্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদনে জো বাইডেনের জয় ভণ্ডুল করতে ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টাদের নানা পরিকল্পনার কথাও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা, আইনপ্রণেতা এবং তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ওপর ট্রাম্প চাপ প্রয়োগ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এই ঘটনায় বিদ্রোহসহ চারটি ফৌজদারি অপরাধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে সুপারিশ করেছে এই কমিটি। ওই চার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ট্রাম্পের অন্তত ৪০ বছরের জেল ও ১ লাখ ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে। এদিকে, ওই হামলার ঘটনায় সম্প্রতি একাধিক সমর্থকের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন মার্কিন আদালত।