ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘জাতীয়তাবাদী হেল্পসেল’ আয়োজিত সরকারবিরোধী আন্দোলনে হতাহত ও নিখোঁজ নেতাকর্মীর সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ফখরুল বলেন, ‘যাদেরকে নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের সবার রাজনৈতিক অবস্থান জানি। কে গাড়ির অনুমোদন নেওয়ার জন্য ফাইল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেছেন, কারা নিজের স্কুলের অনুমতি নেওয়ার জন্য সরকারি জমি নিয়েছেন- এসব খবর সবাই জানেন। এ ধরনের নৈতিকতাবিহীন মানুষদেরকেই নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, বিএনপিসহ সব বিরোধী দল ইভিএমের বিরোধিতা করেছে। ইভিএম দিয়ে কখনোই মানুষের রায়ের প্রতিফলন হবে না। তারা এখনও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এর বিরোধিতা করছেন।
সিটি নির্বাচনে ইভিএমের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইভিএম দিয়ে কখনোই মানুষের রায়ের প্রতিফলন হবে না। ইভিএম মেশিন পৃথিবীর সব দেশে রিজেকটেড হয়ে যাচ্ছে। ভোটারের ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটানোর মতো যথেষ্ট কৌশল এই মেশিনের মধ্যে রয়েছে। এটাকে ম্যানিপুলেটেড করা যায়।’
সোমবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভোট শুরুর আগেই তার বোমা মেরে, লাঠিসোঁটা দিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়েছে। তারপর বলবে আপনারা পারেননি। পারবো কোত্থেকে? যে গুণ্ডা, যে লাঠি মারে, সন্ত্রাস করে, তার সঙ্গে ভদ্র ও সাধারণ মানুষরা পারবে কোত্থেকে? দ্যাটস দ্যা রিয়ালিটি।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে আমি দায়ী করি এজন্য যে, তারা আমাদের সমাজটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। সন্তানের ভবিষ্যৎকে নষ্ট করে দিয়েছে। এমন একটা সমাজ তারা তৈরি করেছে, যে সমাজে সন্তানরা মানুষ হতে পারবে না। আজ তারা যেটা করছে, সেটা হচ্ছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’
সরকার সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে বশংবদ করে ফেলেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর মধ্যে যারা প্রতিবাদ করতে রাজপথে নেমে এসেছিলেন, তাদের অনেকে আজ আমাদের মধ্যে নেই। তাদের অনেককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন, আর খোঁজ নেই, গুম হয়ে গেছেন। অনেককে হত্যা করা হয়েছে অথবা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গোটা দেশকে একটা নির্যাতনের কারখানা তৈরি করা হয়েছে।’
সরকারের ‘দমন-পীড়নের’ সমালোচনা করে তিনি নিখোঁজ নেতাকর্মীদের সন্তানদের দিকে তাকিয়ে বলেন, অসহনীয় একটা পরিবেশ, দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। এই সমাজ কীভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি সহ্য করছে- এটাও একটা চিন্তার ব্যাপার।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শফিউল বারী বাবু, মামুন হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।