কোনো ধরনের প্রতিশোধের শিকার হওয়ার ভয় ছাড়াই নাগরিক সমাজের কাজ করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপের ২৮টি দেশের ওই জোট আরো বলেছে, গণতান্ত্রিক সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা ও একটি প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ অপরিহার্য।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক মুখপাত্র গতকাল শুক্রবার ব্রাসেলসে এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।এ ছাড়া তাঁদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই জরিমানা না দিলে তাঁদের আরো এক মাস কারা ভোগ করতে হবে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক মুখপাত্র বলেন, অধিকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি ইইউ পর্যবেক্ষণ করেছে। ইইউ এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছে।
বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) হিসেবে অধিকারের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়েও ইইউ উদ্বেগ জানিয়েছে। নিবন্ধন বাতিলের ফলে সংগঠন হিসেবে অধিকারের কার্যক্রম চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা ওই রায়ের নিন্দা জানান এবং বাংলাদেশ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও গত বৃহস্পতিবার ওই রায় নিয়ে উদ্বেগ জানায়।যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস মনে করছে, এই রায় মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক ভূমিকা পালনের সদিচ্ছাকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে।
ইইউ পার্লামেন্টের প্রস্তাবে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকারকর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কাজের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়।