শাবনূর, ঢালিউডের সফল নায়িকাদের একজন। ঝলমলে ক্যারিয়ারটা আলগোছে মলিন হয়ে গেলো, বুঝেও যেন বুঝলেন না; সময়ের সঙ্গে তাল মেলালেন না। যতদিনে বুঝলেন, ততদিনে বড্ড দেরি। তাই সিনেমাই ছেড়ে দেন।
প্রথম দিকে স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন। পরে সংসারে ভাঙন। এরপর থেকে একমাত্র ছেলে আর নিজের স্বজনদের ঘিরেই তার জীবন।
সে জীবন কেমন, তার নিয়মিত রেশ রাখেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলেও। যা দেখে ভক্তরা হন উচ্ছ্বসিত। আবার মনের কোণে উঁকি দেয় অভিমানী আক্ষেপও। যাকে দেখার কথা বড় পর্দায় নানামাত্রিক চরিত্রে, তিনি কিনা শুধুই ফেসবুকে বন্দী! তবুও একেবারে বিস্মৃত হয়ে যাননি, এই সান্ত্বনা।
ঢাকা থেকে ৯ হাজার কিলোমিটার দূরের বাসিন্দা তিনি। সময়ের পাক্কা পাঁচ ঘণ্টা ব্যবধান। এত দূরে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সেই দূরত্ব যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার চেষ্টায় মশগুল। সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভর করেই। ফেসবুকে তার একটি অ্যাকাউন্ট আর পেজ রয়েছে।
দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার টান-ভালোবাসা কেমন, তার গোটা কয়েক নজির ইতোপূর্বে দেখাও গেছে। চলতি বছরের মে মাসে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ। সেখানে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন, আস্ত একটা দিন মমতাজের আতিথেয়তায় খরচ করেছেন। এমনকি নিজে গাড়ি চালিয়ে গায়িকাকে বিনামবন্দর অব্দি পৌঁছে দেন।
এরপর নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা দম্পতি গেলেন অস্ট্রেলিয়া। তাদের খবর পেয়েও চুপ থাকলেন না নায়িকা। বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডায় মেতে ওঠেন। সেই মুহূর্ত আবার আনন্দে শেয়ারও করেন ফেসবুকের পাতায়।
প্রেক্ষাগৃহে তাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। ‘পাগল মানুষ’ নামের সেই ছবিও অনেকদিন আগের। নির্মাণশৈলির ঘাটতি আর নায়িকার ফিটনেসহীনতার কারণে ছবিটি দর্শকের মন জয় করতে পারেনি।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) এই নন্দিত নায়িকার জন্মদিন। শিরোনাম-ছবি দেখে ঢালিউডের পর্দা মাতানো সেই নায়িকার নাম আর কারও অজানা নয়। তবুও বলার জন্য বলা- তিনি শাবনূর।
১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে শাবনূরের জন্ম। তার আসল নাম কাজী শারমীন নাহিদ নুপুর। নির্মাতা এহতেশামুর রহমান চলচ্চিত্রের জন্য তাকে শাবনূর নামটি দিয়েছিলেন।
১৯৯৩ সালে ‘চাঁদনি রাতে’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে আত্মপ্রকাশ করেন শাবনূর। তবে ছবিটি সফলতা পায়নি। কিন্তু নিজের রূপ-অভিনয়শৈলিতে নজর কাড়তে ভুল করেননি তিনি। যার সুবাদে পরের বছরই নায়িকা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান। এরপরের ইতিহাসটা সিনেমাপ্রেমী সব দর্শকের জানা।