রাজনৈতিক কারণে ও ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে মগজ ধোলাই অব্যাহত রাখতেই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ ও দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিরোধিতার প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করা হচ্ছে। আর আরেকটি পক্ষ রয়েছে, যারা ধর্মটাকে অপব্যবহার করে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের জন্য বিরোধিতা করছে।
দীপু মনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, তেমনি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও অনেক বাধা তৈরি হচ্ছে। আমাকে এবং যারা বাইয়ের লেখক, জাফর ইকবাল ভাইসহ ( শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল) তাদের বেশ কয়েকজনকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন- চামড়া মোটা করতে হবে, পিঠে কুলা বাধতে হবে। কিন্তু আমরা দমে যাওয়ার পাত্র নই। আমাদের দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করার জন্য, আর যে স্বপ্ন নিয়ে এত ত্যাগের বিনিময়ে দেশটি তৈরি হয়েছিল সেই স্বপ্নের জায়
ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটি তো নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতা তো আছেই। সব দেশেই থাকে, আমাদের দেশেও আছে। আমাদের দেশের ধরনটা হয়তো ভিন্ন, টক্সিট। এখানে (বাংলাদেশে) বিরোধিতা করলে একটি পক্ষ আছে যারা আমাদের পক্ষটাকে নিশ্চিহ্নই করে দিতে চায়। গ্রেনেড মেরে, বোমা মেরে গুলি করে, নানা পদ্ধতিতে।
‘কোচিং ও নোট-গাইডের কারণে অনেকে বিরোধিতা করছেন। কোচিংয়ের সব কিছু খারাপ তা তো নয়, কোচিং কথাটাও খারাপ নয়, বাণিজ্য কথাটাও খারাপ নয়, কিন্তু যারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে যেতে, সেখান থেকে রোজগারটা করেন অতিরিক্ত। সেখানে সমস্যা। এই কাজ যারা করেন শিক্ষার্থীদের কোচিং করান তাদের একটি মহাভয়, ভয়টি অমূলক নয়। কারণ এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কোচিং দরকার হবে না। আরেকটি পক্ষ আছে নোটবই-গাইড বই, তাদেরও ভয় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তো নোট-গাইড বই দরকার হবে না। তাদের ভয়টিও অমূলক নয়, এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে নোটবই-গাইড বই প্রয়োজন হবে না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোলাইমান খান, ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।