The news is by your side.

ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় দেশবাসীর কাছে ন্যায়বিচার চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

0 72

 

সারা দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় দেশবাসীর কাছে বিচার চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।’

বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ধ্বংসযজ্ঞ দেখে এসময় সরকার প্রধানের চোখেও আসে জল। প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেলস্টেশন ঘুরে দেখেন। গত শুক্রবার মেট্রো রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাংচুর করা হয় সিসি ক্যামেরা, এলইডি মনিটর, টিকেট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গা। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিষ।

যারা ১৭ জুলাই থেকে একাধিক দিন ধরে তান্ডব চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করারও আহবান জানান তিনি।

বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। এই অ্যালাইনমেন্টে (মেট্রোরেলের) আমি পরিবর্তন এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে দ্রুত সময়ে হয়। এটাকে আরো বাড়িয়ে একেবারে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলষ্টেশন পর্যন্ত করে দিয়েছি। যাতে মানুষ আরো সুন্দরভাবে চলতে পারে। যারা এর ওপর আঘাত করলো এই মেট্রো রেল এভাবে ভাংচুর করলো, যেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চলাচল করতে পারতো অল্প ময়ের মধ্যে। এদেশের মানুষ কত খুশি ছিল। এই আনন্দ যারা নষ্ট করলো, জনগণের নির্বিঘ্নে  চলাচলের পথ যারা রুদ্ধ করলো তাদের বিচার এদেশের জনগণকেই করতে হবে। আমি সেই বিচারের দিকে চেয়ে আছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এই মেট্রো রেল করবার সময়ও অনেক বাধা-বিঘ্ন  অতিক্রম করতে হয়েছিল। সব বাধা অতিক্রম করে এই মেট্রো রেল করে দিয়েছি। সময়ের আগেই তা জানগনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ মেট্রো রেল বন্ধ কারণ, এই ষ্টেশন সেভাবে ধ্বংস হয়েছে যেটা সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক সিষ্টেম, সম্পূর্ণ মডার্ণ।  এটাতো কতদিনে ঠিক হবে আমি জানি না। কস্ট পাবে কিন্তু মানুষ।

সরকার প্রধান বলেন, এটা তাঁর সরকার করে দিয়েছে সকলে যাতে সময়মত স্কুল কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে পারেন এবং কর্মস্থল থেকে আবার ঘরে ফিরে অন্তত কিছুটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। আর্থিত দিকটাও সাশ্রয় হয়। সেসব কথা চিন্তা করেই তাঁর সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে মেট্রো রেলসহ বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম নির্মাণ করে দিয়েছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেল ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এতে আপনারাই কস্ট পাবেন। দেশের মানুষই কস্ট পাবে। এই ঢাকা শহরের মানুষই কষ্ট পাবেন। ঘন্টার পর ঘন্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। কর্মস্থলে সময়মত পৌঁছানো আবার ফেরত আসায় দীর্ঘ সময় লাগবে, বসে বসে সেই ট্রাফিক জ্যামে কষ্ট পাওয়া থেকে আপনাদের এই কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, ‘তাই আমি আপনাদেরকেই বলবো যে কষ্ট আমি লাঘব করতে চেয়েছি সেই কষ্ট আবার যারা সৃষ্টি করলো তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিচার তাদের করতে হবে। আমি তাদের কাছেই বিচার চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, যে সব স্থাপনা মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে বেছে বেছে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। যারা উন্নয়নবিরোধী এসব কর্মকান্ডে জড়িত তাদের মানসিকতা কোন ধরনের সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধ্বংসের চিহ্ন দেখলাম এটা বিশ্বাস হতে চায়না যে এদেশের মানুষ এটা করতে পারে। কিন্তু, সেই কাজই করেছে। আর আমার দুঃখ লাগে ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করলো আমি সাথে সাথে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো  সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার কিরুদ্ধে সরকার আপিল করলো। সেই সময়ে হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে তারা একটা সময় (সুপ্রিম কোর্ট) দিলেন। এই সময়ের মধ্যে সকলের বক্তব্য শুনে তারা একটা সিদ্ধান্ত দেবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোরনকারি থেকে শুরু করে দেশবাসীকে বললাম একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এটাতো সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। সেই আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে বললাম বিরত থাকতে। একটুতো ধৈর্য ধরতে হবে। যে কোন নগারিককেইতো আইন আদালত মেনে চলতে হবে। আর এই এর সুযোগ নিয়ে সেই ১৭ জুলাই থেকে যেভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো।’

তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর ২৯টি বছর এদেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রীজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে গত ১৫ বছরে মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি প্রশ্ন করেন এগুলো কাদের জন্য? এই মেট্রো রেলে কি আমি চড়বো? আমাদের সরকার ও মন্ত্রীরা শুধু চড়বে না জনগণ চড়বে, এটা আমার প্রশ্ন। এর উপরকারিতা এদেশের সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন। তাহলে এটার ওপর এতো ক্ষোভ কেন?

শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতেই কাজ করে যাচ্ছি এবং করেছিও। যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কী অবস্থা ছিল? আর আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের একধাপ উচ্চধাপে উঠে গেছে। সেখান থেকে নামাতে হবে কেন? আমার প্রশ্ন সেটাই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.