দেশের সাইবারজগতে ‘হামলার ঝড়’ চালানোর হুমকি ও তথ্য ফাঁসের ঘটনার পর সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ব্যাংক বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
কেউ কেউ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের কাছে সহায়তা চেয়েছে। কেউ কেউ সাইবার নিরাপত্তা দল গঠন করেছে।
তিনটি প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা দল বা কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) গঠনের কথা জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো নির্বাচন কমিশন, গণভবন ও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
তিতাসের আইসিটি শাখার মহাব্যবস্থাপক মো. তারিক আনিস খান বলেন, তাঁরা সার্ট গঠন করে আইসিটি বিভাগকে জানিয়েছেন।
সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা আইসিটি বিভাগের প্রকল্প বিজিডি ই-গভ সার্ট ৩ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশে সাইবার হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে সতর্কতা জারি করে। তাতে বলা হয়, ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে সাইবার আক্রমণের ঝড় চালানোর হুমকি এসেছে। হুমকিদাতা হ্যাকার গোষ্ঠী নিজেদের ‘হ্যাকটিভিস্ট’ দাবি করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে হামলার লক্ষ্য বানানোর ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী বলে দাবি করে ওই হুমকিদাতারা।
অবশ্য আইসিটি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, হামলার ঝড় চালানোর কথা বললেও এমন হতে পারে, তারা কোনো হামলাই করবে না। আবার এমনও হতে পারে, তারা বড় হামলা করবে। তাই বাংলাদেশের সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।
সাইবার হামলার হুমকি ও রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের পর ৯ আগস্ট ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোকে নিয়ে বৈঠক করে আইসিটি বিভাগ।
অবশ্য আইসিটি বিভাগ সূত্র আরও বলছে, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়ে আইটি অডিট (নিরীক্ষা) করালে নিরীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ও জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় যাচাই করে নিতে হয়।
সাইবার হামলার হুমকির পর দেশের বেশ কিছু ওয়েব সাইটে ডিডস (ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়েল অব সার্ভিস) হামলা করা হয়েছে। এ ধরনের হামলার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটিকে ব্যস্ত রাখা হয়, যাতে সেটিতে কেউ ঢুকতে না পারে। বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের নামধারী কিছু হ্যাকার গ্রুপ পাল্টাপাল্টি হুমকি ও হামলা করছে।
সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্রুপ-আইবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ব্লগে ‘মিস্টিরিয়াস টিম বাংলাদেশ’ নামে এক গ্রুপের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গ্রুপটি ২০২০ সালে তৈরি হয়। তারা ২০২২ সালের দিকে কয়েকটি দেশে সাইবার হামলার পর সবার নজরে আসে। তারা সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পরিবহন খাতের মতো সংস্থাকে লক্ষ্যবস্তু বানায়।
মিস্টিরিয়াস টিম বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুন থেকে এখন পর্যন্ত ৭৫০টির বেশি ডিডস হামলা করেছে। পাশাপাশি ৭৮টি ওয়েবসাইট বিকৃত করেছে।