দেশে শিক্ষা ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিবার ঋণ নেয়
বাংলাদেশে মোট শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ শতাংশ পরিবার বহন করে।
ভারতে শীর্ষ ২০ শতাংশ পরিবার সরকারি, বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন সব রকম স্কুলে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে।
২০১৭/১৮ সালে পরিবারগুলো সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন স্কুলে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করে।
গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০২২-এ এমন চিত্র উঠে এসেছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। ব্র্যাক, ইউনেস্কোসহ ৯টি প্রতিষ্ঠান এ প্রতিবেদন প্রণয়নে যুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, শিক্ষা ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিবার ঋণ নেয়। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ১২ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় করে এবং ৬ শতাংশ পরিবার স্কুলের ফি মেটাতে ঋণ করে থাকে।
বাংলাদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ মেটায়। ভুটান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণকারীদেরকে স্বল্প সুদে ঋণের জন্য সরকারি শিক্ষার্থী ঋণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বৃদ্ধি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফির ওপর করারোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। ফলস্বরূপ কিছু সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেসরকারি পরিষেবা প্রদানকারীরা ফির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এই প্রতিবেদনের জন্য করা একটি জরিপে দেখা যায়, ভারতের এক হাজার ৫০টি কম ফি নেওয়া বেসরকারি স্কুলের মধ্যে এক হাজারটি স্কুল শুধুমাত্র ফির উপর নির্ভর করে চলে। আফগানিস্তান, ভারত এবং নেপালের শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ফির ওপর নির্ভরতা এবং সরকারি তহবিলের অভাবকে তাদের কর্মসূচির উন্নয়নে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করে।
গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্টে বলা হয়, কোভিড-১৯ বেসরকারি স্কুলের অর্থের ওপর একটি বড় মূল্য আদায় করেছে। ভারতের ন্যাশনাল ইন্ডিপেনডেন্ট স্কুলস্ অ্যালায়েন্স দেখেছে তাদের নেটওয়ার্কের তিন হাজার ৬৯০টি স্বল্প-ফি নেওয়া বেসরকারি স্কুলের মধ্যে ২০২০/২০২১ সালে মাত্র ৪ শতাংশ স্কুল ১০ শতাংশের বেশি ফি আদায় করতে পেরেছিল। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই সমস্যা নিয়ে সরকারি প্রতিক্রিয়া ছিল অপর্যাপ্ত। বাংলাদেশে সরকারি শিক্ষকরা তাদের বেতনসহ চাকরির নিরাপত্তা পেয়েছিলেন, কিন্তু এনজিও’র শিক্ষকরা তাদের বেতনের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ পেতেন।
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ইরান, পাকিস্তান, ভুটান, এবং শ্রীলঙ্কার ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্বভার দুটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিভাজিত, যা শিক্ষার সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গিকে বাধাগ্রস্থ করছে।