The news is by your side.

দেশে কমেছে বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহ, তহবিল প্রদানে ধীরগতি

0 13

 

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য যখন ডলার প্রয়োজন ঠিক এমন সময়েই উন্নয়ন সহযোগীদের তহবিল ছাড় কমেছে। এশিয়ার কয়েকটি বৃহৎ অংশীদারের ধীরে চলো নীতির কারণে দেশে কমেছে বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে চীন, ভারত এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) তহবিল প্রদানে ধীরগতি রয়েছে।

তাঁরা বলেছেন, এদের মধ্যে কেউই একটি পয়সারও প্রতিশ্রুতি দেয়নি এবং তাদের মধ্যে একটি দেশ চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম চার মাসে অতি সামান্য পরিমাণ তহবিল ছাড় করেছে।

তহবিল ছাড়ে অনীহার কারণে ইতোমধ্যে এক ডজনের বেশি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারীরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগীদের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় দিপক্ষীয় দাতা জাপান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধান দিপক্ষীয় দাতা সংস্থা চীন, ভারত এবং চীনের নেতৃত্বাধীন এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল তখন প্রধান বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থাগুলো বর্তমান সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখছে।

তিনি বলেন, চীন ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে, তবে ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে এখন দৃশ্যমান নয়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার  আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম চার মাসে চীন এবং ভারত কোনো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

বেইজিংভিত্তিক এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক এই সময়ে কোনো তহবিলের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। যদিও ভারত সামান্য পরিমাণ সহায়তা ছাড় করেছে

পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী এই অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে একটি পয়সাও ছাড় করেনি। ইআরডির পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলার ঋণ বিতরণ করেছে এবং এআইআইবি মাত্র ৬৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে। এই সময়ে চীন কোনো অর্থ প্রদানের হিসাব খোলেনি।

অর্থায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে ইআরডির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা চীন, ভারত এবং এআইআইবির কাছ থেকে ২২৪ কোটি ডলার মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণ এবং অনুদান ছাড় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এদিকে ইআরডি চলতি অর্থবছরে ১০৮২ কোটি ডলারের ঋণ এবং সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এশিয়ার দাতা এবং ঋণদাতারা এই চার মাসে কোনো তহবিল নিশ্চিত করেনি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই অর্থবছরের দ্বিতায়ার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সময়ে প্রধান উন্নয়ন সহযোগীদের (চীন, ভারত এবং এআইআইবি) কাছ থেকে বড় ধরনের অগ্রগতি প্রত্যাশা করছি।’

ইআরডির আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, বহুপক্ষীয় ঋণদাতারা (বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় দাতা জাপান) গত চার-পাঁচ মাসে বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৮১ লাখ ডলার, এডিবি ২৬ কোটি ৬১ লাখ, জাপান ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার এবং রাশিয়া ১৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ঋণ এবং সহায়তা ছাড় করেছে।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশের সব বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী এবং ঋণদাতারা ১২০ কোটি ডলারের মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণ এবং অনুদান ছাড় করেছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলেন, ‘রেলওয়ে, সড়ক পরিবহন এবং সেতু এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তাদের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বরাদ্দ করা কিছু তহবিল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ভারত, চীন এবং এআইআইবির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে, যাতে তারা বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ সহায়তায় এগিয়ে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা তার ফলাফলও পাচ্ছি।’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.