কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপ প্রবাহ। সেই মাঝারি তাপপ্রবাহ এখন রূপ নিয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চুয়াডাঙ্গায় এই মৌসুমেরও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তাপদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠাণ্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে সব শ্রেণির মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে।
এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে।
অপরদিকে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ৫-৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখুন। এ সময় জমিতে যেন পানির ঘাটতি না হয়।
এদিকে, তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বাইরে কড়া রোদ থেকে বাঁচতে অনেকেই গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার লেবুর শরবত খেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।
শহরের কয়েকজন রিকশাচালক বলেন, রোদের তাপে মনে হচ্ছে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। সকাল ও বিকালের পর থেকে যাত্রী পেলেও দুপুরে বেশির ভাগ রাস্তাঘাট ফাঁকা। পেটের দায়ে এই তীব্র গরমেও রিকশা চালাতে হচ্ছে।
শহরের রেলবাজারের রেলগেট সংলগ্ন মোড়ে এক শরবত বিক্রেতা বলেন, গরমের কারণে শরবত বিক্রি বেড়েছে। পিপাসা মেটাতে ও একটু স্বস্তি নিতে ঠাণ্ডা লেবুর শরবত পান করছেন লোকজন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ জেলার সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আদ্রতার পরিমান ছিল ৪৩ শতাংশ। এরপর তাপমাত্রা আরও বেড়ে বিকাল ৩টায় এ জেলার সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ ছিল ২৭ শতাংশ। এটি এ জেলার এই মৌসুমেরও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।