দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফর করে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই নিষেধাজ্ঞাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে না। নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যকে বেছে নিয়ে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় না। ব্যক্তির কর্মকাণ্ডকে বিবেচনায় নিয়ে তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলে তাঁর সম্পদ জব্দের পাশাপাশি ভিসায় বিধিনিষেধ দেয়া হয়। অতীতে আমরা নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ কাজে লাগিয়েছি, ভবিষ্যতেও তা ব্যবহার করবো।
দুদিনের সফরে গত রোববার ঢাকায় এসেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা।সোমবার ঢাকার ছাড়ার আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে রিচার্ড নেফিউ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষমতা আছে। গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি কর্মসূচির আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকি। যারা দুর্নীতি করেছেন এবং যারা অর্থ পাচারে সহায়তার মাধ্যমে কার্যত দুর্নীতিতে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এটি অতীতে ব্যবহার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করব।
সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা বা ব্যক্তি নিয়ে আমি মন্তব্য করব না। তবে এটুকু বলব, অতীতে আমরা নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ কাজে লাগিয়েছি, ভবিষ্যতেও তা ব্যবহার করব।
অর্থ পাচারের সঙ্গে কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা খুঁজে পেলে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে রিচার্ড নেফিউ বলেন, প্রথম পদক্ষেপটি হচ্ছে অভিযোগ প্রমাণের পর ওই ব্যক্তির সম্পদ জব্দ করা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এটি করা হয়। পাচার হওয়া টাকা যাতে অন্য কোথাও না যায়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য তা জব্দ করা হয়। যে দেশ থেকে অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে, সে দেশে যোগাযোগ করা হয়। অর্থাৎ অর্থ জব্দ করার পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকানো; যে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে, সে দেশে ফেরত পাঠানোসহ সব কটি পদক্ষেপই এর মধ্যে যুক্ত। পুরো বিষয়গুলো আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই করা হয়।
দুর্নীতিবাজদের অর্থ পাচারের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র এমন প্রশ্নের ব্যাখ্যায় রিচার্ড নেফিউ বলেন, আমরা বলে আসছি, অন্য দেশের মতো আমাদেরও দুর্নীতি দূর করার জন্য এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে। এসবের মধ্যে অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশে যে অর্থ আসে, সেটিও অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের দুর্নীতি দমন কৌশলের দিকে তাকালে দেখবেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থ পাচারের স্বর্গরাজ্য হতে দেওয়া হবে না- বিষয়টিকে আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের আওতায় বেশ কটি আইনি পদক্ষেপ আমাদের আছে। আইনি কাঠামোতে যে দুর্বলতা আছে, তা দূর করার জন্য নতুন আইনও বিবেচনায় রয়েছে।