বিদ্যা সিনহা মিম। কলকাতায় তিন সপ্তাহ আগেমুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘মানুষ’। এবার দেশে মুক্তি পেল সিনেমাটি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও ওয়েব মাধ্যমেও ব্যস্ততা রয়েছে এ অভিনেত্রীর। সঞ্জয় সমদ্দার পরিচালিত মুক্তিপ্রাপ্ত নতুন সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে
কলকাতার পর শুক্রবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘মানুষ’; কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
তারকাবহুল সিনেমাটি মুক্তির আগেই আলোচনায় এসেছে। এ কারণে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। দেশে মুক্তির দিনই সবার সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখেছি। সবাই বেশ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সিনেমাটি নিয়ে আমারও অনেক প্রত্যাশা ছিল। দেশে জিৎদার বড় একটি ভক্তশ্রেণি রয়েছে। আমাকেও দর্শকভালোবাসেন। আর সঞ্জয়দা বাংলাদেশি নির্মাতা। স্বাভাবিকভাবেই আমরা অনুমান করছি যে এটি দর্শক গ্রহণ করবেন। হয়েছেও তাই। কলকাতার মতো এদেশের দর্শকরাও সিনেমাটি লুফে নিয়েছেন। এটি আমার অভিনয় ক্যারিয়ারে বিশেষ একটি সিনেমা। এরকম একটি সিনেমার দর্শক সাড়ায় আমি অভিভূত।
কী কারণে আপনার কাছে এটি বিশেষ মনে হচ্ছে?
আমিই বাংলাদেশের প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমায় অভিনয় করেছি। এটি বিভিন্ন ভাষায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুক্তি পেয়েছে। দিল্লিতে বেশকিছু হলে হাউসফুল গিয়েছে। আর দুই বাংলায় প্রথমবার অতিথি চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি।
বাংলাদেশের হলে ভারতের সিনেমা মুক্তির বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
দেখুন, বড় উৎসব ছাড়াবড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি দিচ্ছেন না প্রযোজকরা। এ কারণেই একেরপর এক ভিনদেশি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। যদি বাংলাদেশে নিয়মিত নতুন সিনেমা আসত, তাহলে হল মালিকরা দেশের সিনেমাই দেখাতেন। সবার ওপরে দেশ। বিদেশি সিনেমার আগে দেশের সিনেমাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
সিনেমায় অতিথি চরিত্রে আপনাকে দেখা গেছে। নিজেকে এমন চরিত্রে কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছেন?
সিনেমার গল্প ও চরিত্র পছন্দ হয়েছে বলেই এতে অভিনয় করেছি। এতে আমার চরিত্র মন্দিরা নামেএকপুলিশ কর্মকর্তার। অতিথি চরিত্র হলেও এটি চ্যালেঞ্জিং।বলিউডসহ সারা দুনিয়ার চলচ্চিত্রে তারকাদের বিশেষ উপস্থিতি থাকে। চরিত্রের গুরুত্ব আছে বলেই তারা করছেন। একটি ভালো চরিত্রই গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। শুধু কলকাতার সিনেমা বলে অভিনয় করেছি, তা কিন্তু নয়। দেশেও যদি এ ধরনের চরিত্রের প্রস্তাব আসে, চরিত্রের গুরুত্ব বিবেচনায় তাতে অভিনয়ে আপত্তি করব না।
সিনেমায় জিতের বিপরীতে অভিনয় করেছেন, তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আগেও জিৎদার বিপরীতে ‘সুলতান’ সিনেমায় কাজ করেছি। যে কারণে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা বেশভালো ছিল। এবারআরও ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে পেয়েছি সঞ্জয়দাকে [সঞ্জয় সমদ্দার]। একবারের জন্যও মনে হয়নি বিদেশের মাটিতে কাজ করেছি। জিৎদা যেমন বিনয়ী, তেমনি সহযোগিতাপরায়ণ একজন শিল্পী। মানুষ হিসেবেও অসাধারণ।
এই সময়ের ব্যস্ততা কী নিয়ে?
নতুন নতুন সিনেমার চিত্রনাট্য আসছে। সেগুলো পড়ছি। মনের মতো হলেই কাজ করব। কিছুদিন আগে পান্না কায়সারের জীবনী নিয়ে তৈরি ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ ছবির কাজ শেষ করেছি। চলছে বেশকিছু পণ্যের প্রচারণার কাজ।
সরকারি অনুদানের সিনেমাটিতো আগামী বছর মুক্তি পাওয়ার কথা। সেটি নিয়ে কেমন আশাবাদী?
পান্না কায়সারের মতো একজনগুণী মানুষের চরিত্রে অভিনয় করা আমার জন্য বড় ব্যাপার বলে মনে করি। দর্শক আমাকে তাঁর বায়োপিকেদেখবেন, এটি তো বড় পাওয়া; যা আমার দর্শকদের জন্যও চমক। এতে আমার লুক প্রকাশ করার পর থেকেই সবার প্রশংসা পাচ্ছি। সবাই ভীষণ পছন্দ করেছেন। চেষ্টা করছি মন দিয়ে চরিত্রের মধ্যে প্রবেশ করতে। কতটুকু পেরেছি, দর্শক তা ভালো বলতে পারবেন। সিনেমার গল্পও অসাধারণ। ওয়াহিদ তারেক অনেক যত্ন নিয়ে এটি নির্মাণ করেছেন। সব মিলিয়ে দর্শক এটি দেখবেন– এ আশা করাই যায়।
‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ সিনেমায় অভিনয় করার কথা ছিল। কাজের অগ্রগতি কতদূর?
হ্যাঁ, সবাই জানেন, সত্য ঘটনা নিয়ে নির্মিতব্য সিনেমাটিতে ‘ইয়াসমিন’ চরিত্রে আমি কাজ করছি। তবে এর দৃশ্যধারণ কবে কোথায় শুরু হবে, তানিয়ে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
চলতি বছরটি আপনার জন্য কেমন ছিল?
দেখতে দেখতে একটি বছর কীভাবে যে কেটে গেল, টেরই পাইনি। বোধহয় সুসময় তাড়াতাড়িই চলে যায়। এ বছরের শুরুর দিকে মুক্তি পায় ‘অন্তর্জাল’। বছরের শেষেও মুক্তিপেল আরওএকটি সিনেমা। এছাড়া এ বছর একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেও বেশ দর্শক সাড়া পেয়েছি।