দুঃসময় এলে আওয়ামী লীগের বসন্তের কোকিলদের পাঁচ হাজার ভোল্টেজের বাতি দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরুর আগে সকালে চট্টগ্রামের দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। দুপুরে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেওয়ার সময় বিভিন্ন নেতার নামে স্লোগান দেন তাদের কর্মী-সমর্থকরা।
চট্টগ্রামে দলীয় কোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, চট্টগ্রামের মাটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি। এ ঘাঁটিতে যে ফাটল ধরেছে, তা ক্লোজ করে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। মৌসুমী ও অতিথি পাখিদের স্থান আওয়ামী লীগে নেই। দল ভারী করার জন্য যারা পকেট কমিটি করবে, তাদের প্রয়োজন নেই। নেতৃত্বে সুবিধাবাদীরা আসলে আওয়ামী লীগ টিকে থাকতে পারবে না। দুঃসময়কালে পাঁচ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।
খারাপ লোকদের দলে না টানার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটে আবরার হত্যাকারীর মতো কর্মী আমাদের দরকার নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার কলহ সৃষ্টিকারী কর্মী আমাদের দরকার নেই। রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে পানিতে চুবানোর মতো কর্মী আমাদের দরকার নেই। মাস্তানি করে, গডফাদারগিরি করে নেতা হওয়া যাবে না।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘স্লোগান দিয়ে, বিলবোর্ড দিয়ে, রঙিন পোস্টার দেখিয়ে নেতা হওয়ার দিন শেষ। ঢাকার সম্মেলনে যেসব নেতার বিলবোর্ড পোস্টার বেশি দেখা গেছে, তাঁরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি। নেতা হবে দলের শৃঙ্খলা অনুযায়ী। দলের সঙ্গে সুখে-দুঃখে যারা ছিলেন, তাঁরা নেতৃত্বে আসবেন।’
তিনি বলেন, বিশ্বের তিনজন সৎ রাজনীতিকের একজন আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিকের একজন তিনি। বাংলাদেশে ৭৫ পরবর্তী সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক তিনি, বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে যিনি জীবনযাপন করেন তিনিই হলেন শেখ হাসিনা। নেত্রীর সততা-সাহস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্যদ মাহফুজুর রহমান মিতা, দিদারুল আলম, নারী সংসদ সদস্য খদিতাজুল আনোয়ার সনি।