ভারত মহাসাগরে একের পর এক চিনা চর জাহাজের উপস্থিতির ‘জবাব’ দিতে এ বার বেজিংয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল ভারতীয় নৌসেনা। ফিলিপিন্সের নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নিতেই দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনার তিনটি যুদ্ধজাহাজ গিয়েছে ।
ভারতীয় নৌবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড কৌশলগত মোতায়েনের অংশ হিসেবেই দক্ষিণ চিন সাগরে তিনটি রণতরী পাঠিয়েছে। সেগুলি এখন সিঙ্গাপুর ঘুরে ফিলিপিন্স উপকূলে পৌঁছে গিয়েছে। ভারতীয় নৌসেনার রিয়ার অ্যাডমিরাল রাজেশ ধনখড়ের নেতৃত্বে এই তিনটি যুদ্ধজাহাজ— ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডেস্ট্রয়ার আইএনএস দিল্লি, জ্বালানিবাহী আইএনএস শক্তি এবং কর্ভেট শ্রেণির ছোট, দ্রুতগামী যুদ্ধজাহাজ কিল্টন।
দক্ষিণ চিন সাগরের অধিকাংশ এলাকাই নিজেদের অংশ বলে দাবি করে বেজিং। তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ফিলিপিন্স, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনেইয়ের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট শাসকগোষ্ঠীর বিরোধও রয়েছে। ফিলিপিন্স এবং চিনের বিরোধের অন্যতম কারণ দক্ষিণ চিন সাগরের সেকেন্ড থমাস শোলে দ্বীপকে কেন্দ্র করে। ফিলিপাইন দ্বীপের পালাওয়ান থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই দ্বীপে ১৯৯৯ সালে ফিলিপিন্স নৌবাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি জাহাজে অস্থায়ী নৌঘাঁটি বানিয়ে অবস্থান নিয়েছিল প্রায় দু’দশক আগে।
২০১২ সালে ফিলিপিন্সের কাছ থেকে স্কারবোরো শোলে দ্বীপের দখল নিয়েছিল চিনা পিপলস্ লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। যা নিয়ে দু’দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০১৬ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের মোট বাণিজ্য সামগ্রীর প্রায় ২১ শতাংশই এই সমুদ্রপথ দিয়ে পরিবহণ করা হয়। বিগত কয়েক বছরে সেই পরিমাণ আরও বেড়েছে। ফলে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে চিনের সংঘাতের পারদ চড়ছে।
ভারত মহাসাগরেও তৎপরতা বাড়াচ্ছে বেজিং। ভারতের দুই পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপে গত কয়েক বছর ধরেই চিনা চর জাহাজের আনাগোনা রয়েছে। মার্চের শেষ পর্বে ওই অঞ্চলে চারটি চিনা জাহাজ— শিয়াং ইয়াং হং-০১, শিয়াং ইয়াং হং-০৩, ইউয়ান ওয়াং-০৩ এবং ডা ইয়াং হাওয়ের উপস্থিতি চিহ্নিত হয়েছিল।
চার বছর আগে পূর্ব লাদাখে চিনা ফৌজের অনুপ্রবেশের সময়ও ভারতীয় নৌসেনার একটি যুদ্ধজাহাজকে দক্ষিণ চিন সাগরে পাঠানো হয়েছিল।