২০২১ সালের আগস্টে দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবানের প্রথম শাসনামলে কঠোর শরিয়াহ আইনের সাজা কার্যকর ছিল। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা এবার অতীতের মতো দেশ শাসন করবে না; কিন্তু তাদের আবার পুরোনো ধারায় ফেরার আলামত দেখা যাচ্ছে।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর তিন নারীর প্রাত্যহিক জীবনের বিষয় নিয়ে ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’ নামে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়। যেটি প্রযোজনা করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স। খবর বিবিসির।
ব্রেড অ্যান্ড রোজেসের এক দৃশ্যে দেখা গেছে, এক তরুণী তালেবান যোদ্ধাকে বলেন- আপনি শুধুমাত্র নারীদের নির্যাতন করেন।
তালেবান যোদ্ধা বলেন, আমি তোমাকে কথা বলতে না করেছি। আমি তোমাকে এখানেই মেরে ফেলব!
ওই তরুণী উচ্চস্বরে বলে ওঠেন- ‘আমাকে মেরেই ফেলুন! আপনারা স্কুল আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন, এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো!’
তাদের বাগবিতণ্ডা গোপনে ধরা পড়েছিল মোবাইল ফোনের ক্যামেরায়। কাজটি ক্যামেরাবন্দি করা যে সহজ ছিল না, ফোনের নড়াচড়াতেই তা স্পষ্ট।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণী ও অস্ত্রধারী তালেবান যোদ্ধার মধ্যে বাগযুদ্ধ যে কাউকে নাড়িয়ে দেবে।
জেনিফার লরেন্স ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’ এর দৃশ্যে সেই তরুণীর সঙ্গে তালেবান যোদ্ধার বাদানুবাদের সেই মুহূর্তটি তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’ আফগান নারীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এটি আবেগ আর সময়ের প্রয়োজনের জায়গা থেকেই তৈরি করেছি।
বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, আফগান নারীদের হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার ভাবনটা খুবই দুঃসহ। নিজ দেশে তাদের নিজেদের কোনো স্বাধীনতা নেই। তাদের জীবনের গল্প তাদের নিজেদের মতো করে ডকুমেন্টারিতে তুলে আনতে সুযোগ দেওয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- স্বাধীন কাবুল প্রযোজনা সংস্থা ‘আফগান ডক হাউস’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাহারা মনিকে ডকুমেন্টারি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তালেবান আফগানিস্তান দখলের পর তিনি তিনজন নারীকে অনুসরণ করছিলেন। সাহারা মনি গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করে তাদের ভিডিও ধারণ করেন।