বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ১১টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দৈনিক প্রায় ১৭ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এই বর্জ্যকে রিসাইক্লিং-এর মাধ্যমে দুষণ রোধসহ সম্পদে রূপান্তর করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নোত্তরে তিনি এ সকল তথ্য জানান।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উপাদনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রাপ্ত ১৩টি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে ৪টি প্রস্তাব নির্বাচন নির্বাচন করা হয়েছে। প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চলছে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬টি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই চলছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আমিন বাজার ল্যাণ্ডফিলে ইনসিনারেশন প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া মেডিকেল বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একটি ইনসিনারেশন প্লান্ট স্থাপন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোবেশন একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, সিটি কর্পোরেশনে মোট উৎপাদিত বর্জ্যের ৩৯ শতাংশ ঢাকা শহরে উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে প্রয়ে ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৩ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সব থেকে কম ১২০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়।
তিনি আরো জানান, বাসা বাড়ি থেকে প্রতিদিন এসব বর্জ্য সংগ্রহ করে সেকেণ্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে জমা করা হয়। এরপর ট্রাকের মাধ্যমে তা ল্যাণ্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়।
বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, সংসদ সদস্যরা নির্বাচনের আগে স্ব স্ব এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আসনপ্রতি ৫ বছরে মোট ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের নির্দেশনা দেন। সেই আলোকে ইতোপূর্বে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
যা এখনো চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজ শেষ হলে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, এলজিইডি’র আওতায় চলতি অর্থবছরে দেশব্যাপী পল্লী এলাকায় ৪ হাজার ৯৩০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ২১ হাজার মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ১৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, ১৯ হাজার মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণ, ৯০টি গ্রোথ সেন্টার ও হাটবাজার উন্নয়ন, ৫০টি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, ২৫টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৪০০ কিলোমিটার সেচ খাল খনন ও পুনঃখনন, ৫০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার, ১২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ও সংস্কার, ১১০ কিলোমিটার বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কাজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সকল উন্নয়ন কাজ আগামী জুন মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।