নিজস্ব প্রতিবেদক
রমজানপুর । মাদারীপুরের প্রত্যন্ত জনপদ। খুব বেশিদিন আগের কথা না, এক দশক পূর্বেও খেকশিয়ালের ডাকে ঘুম ভাঙতো গ্রামবাসীর । আজকের বাস্তবতা – অবশ্য পুরোপুরি ভিন্ন। বদলে গেছে দৃশ্যপট।
আধুনিক সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে রমজানপুরসহ গোটা কালকিনি উপজেলা। নিরবে বিপ্লব ঘটে গেছে তথ্যপ্রযুক্তির। উন্নত হয়েছে মানুষের জীবনমান।
বদলে যাওয়া এ জনপদের নেপথ্যে রয়েছে – একজন স্বপ্নবাজ মানুষের নিরলস পরিশ্রম, ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
তিনি আর কেউ নন; ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পিছিয়ে পড়া জনপদ- কালকিনিকে রূপান্তরিত করেছেন; আধুনিক শহরে।
নিজেদের ভিটেমাটি দান করে প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির। এলাকার ভাগ্যবিড়ম্বিত অসহায় মানুষদের মুখে হাসি হাসি ফোটাতে- কখনো রাজনৈতিক কর্মী আবার কখনোবা দক্ষ সংগঠক এর দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও অতি সাধারণ জীবন যাপন করছেন।
সাধারণের মধ্যে থেকে অনন্যসাধারণ সিদ্দিক হয়ে ওঠা ডক্টর আব্দুস সোবহান গোলাপের জন্মদিন আজ।
ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ১৯৫৬ সালের ১১ অক্টোবর বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার (তৎকালীন) কালকিনি থানার রমজানপুর ইউনিয়নের উত্তর রমজানপুর গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মো তৈয়ব আলী মিয়া ও মাতা (মৃত) আনারন নেছা। ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে আবদুস সোবহান গোলাপ দ্বিতীয়।
১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রী গুলশান আরা খুখু’র সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের মধ্যে জনক। ১৯৮৩ সালে বৃত্তি নিয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশে বিদেশ গমন করে নরওয়ের ট্রন্ডহেইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এস ডিগ্রিসহ ভাষাতত্ত্ব ও নরওয়েজিয়ান ভাষার ওপর ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় এমএস ডিগ্রি নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এন্ড সোশ্যাল চেঞ্জেস’ এর ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি লেখালেখিও করেন। তার প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এন্ড সোশ্যাল চেঞ্জেস’, ‘মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও বাঙালি জাতির ইতিহাস’, ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এবং ‘ছোটদের শেখ হাসিনা’।
তার গবেষণা কর্ম দেশি-বিদেশী জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধা তিনি। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলে তিনি ডাকসুর রাজনীতিতে অবদান রাখেন এবং ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে আবদান রাখেন।
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তার সংস্পর্শে আসেন। এরপর ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নির্দেশে নির্বাচনের সার্বিক মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণের নিমিত্তে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে তিনি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে রিপোর্ট প্রদান করেন।
তিনি বরিশালের গৌরনদীর ভিক্টোরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৭২-৭৩) ছিলেন। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য(৭৩-৭৪)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক (১৯৭৮-৮০)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের সাধারণ সম্পাদক (১৯৭৮-৮০)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক(১৯৭৯-৮০)। মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক (১৯৭৮-৮০)। মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্র-সংসদের সহ-সভাপতি (১৯৮১-৮৩)। ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য (১৯৮১-৮৩)।
শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (২০০৮)। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য (২০১২)। আওয়ামী লীগে দপ্তর সম্পাদক (২০১৩)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী (২০১৪-বর্তমান)। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক (২০১৬- বর্তমান)। বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ।