The news is by your side.

‘ডুব’ সিনেমার বিরোধিতার না করতে শাওনের প্রতি আহ্বান

0 205

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ডুব নিয়ে আবার আলোচনা। সিনেমাটি সেন্সরে যাওয়ার পরপর আশঙ্কা জানিয়ে বোর্ডের কাছে চিঠি দিয়েছেন প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী ও অভিনেত্রী-নির্দেশক মেহের আফরোজ শাওন। পাল্টা বক্তব্যও দিয়েছেন ফারুকী।

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে শাওন বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছেন মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ’লিডার’ সিনেমার নির্মাতা দিলশাদুল হক শিমুল। তিনি লিখেছেন—

জনাবা,

মেহের আফরোজ শাওন। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সাহিত্য সম্রাট, আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের দিক নির্দেশক বাতিঘর। আমাদের কাছে তিনি পূজনীয় একজন। হুমায়ূন আহমেদ যে সময়ে লিখতেন সে সময়ে ও তার পরবর্তী সময়-কাল ধরে বাঙালি তরুণ/তরুণীদের হৃদয়ে তিনি চিরস্মরণীয়। তার সৃষ্টিই তাকে অমর করে রেখেছে। আপনি তার দ্বিতীয়া স্ত্রী; এই বিশেষ পরিচয়ে আপনিও আমাদের কাছে অনেক প্রিয় একজন।

হুমায়ূন আহমেদকে আমরা যতটা চিনি তার চাইতে অনেক বেশি চেনেন আপনি। তার মতো মহান লেখকের অনেক নামকরা বইয়ের স্বত্বাধিকারিণী আপনি। এছাড়াও তার সাথে দীর্ঘ দিবস ও দীর্ঘ রজনী কাটানোর বিশেষ অভিজ্ঞতা আছে আপনার। তাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ আপনি করতেই পারতেন! পারেন এখনও! হয়তো সময় ও সুযোগের অভাবে হয়ে ওঠেনি!

বাংলাদেশের একজন প্রথমসারির চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদকে বা তার যাপিত জীবনের অবয়বকে কেন্দ্র করে যদি কোন চলচ্চিত্র বানায়ও তাতে তো আপনার খুশিই হওয়ার কথা!

ভাবেনতো! তিনি কত কাঠ-খড় পুড়িয়ে এ ছবিটা তৈরি করেছেন! বাংলাদেশের মতো জায়গায় একটি চলচ্চিত্র তেরি করতে কত কাঠ পুড়িয়ে অঙ্গার করতে হয় সেটা আপনি ভালোই জানেন হে মাননীয়া!

’ডুব’ সিনেমাটা আপনি দেখেননি, আমরাও দেখিনি। সিনেমাটা মুক্তি পাক আমরা সবাই দেখি। ভালো না লাগলে আপনি আপনার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে দশটা সিনেমা বানাবেন। আমরা একশোজন এক হাজারটা সিনেমা বানাবো (যদিও সেখানে আপনার অনুমতি প্রাপ্তির প্রসঙ্গটা থেকে যায়!)। তারপরও তাকে আমরা অবলীলায়া হারিয়ে যেতে দেব না। সে যে আছে আমাদের হৃদয়ে হৃদয়ে।

আমাদের জানা হুমায়ূন আহমেদ, হিমালয়সম সাহসী হৃদয়ের অধীকারী এক বঙ্গ-সন্তান। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রের নিঃসঙ্কোচ প্রকাশে, কোন বিতর্কের ভয়ে কখনো তিনি থেমে যাননি। কোন সমালোচনাকে কখনো গ্রাহ্য করেননি। তার অনুজতম একজন তার দুঃখ অনুভূতিকে আপন করে নিয়ে তাকে ঘিরে যদি কোন সিনেমা বানায় আর সে সিনেমা নিয়ে যদি আপনি বিব্রতকর চিঠি চালাচালি করেন সেটা হুমায়ূন আহমেদের আত্মাকে কতটা বিব্রত করে ভাবেন তো!

বাংলাদেশের চলিচ্চিত্রের আকাশে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা। মেঘাচ্ছন্ন এ আকাশে আর বজ্রবাণ মারবেন না হে দয়ময়ী! এ দেশের একটি চলচ্চিত্রের প্রতি এতোটা নির্দয়তা আপনাকে শোভা পায় না হে মহীয়সী। আপনি না হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী?

হৃদয়টা বড় করেন। কিছু বলার থাকলে সরাসরি ’ডুব’ এর নির্মাতার সাথে দেখা করেন, উনি ভিনগ্রহের কোন প্রাণী না। আপনারা একই শহরের বাসিন্দা। আমার বিশ্বাস উনি আপনার সকল শঙ্কা দূর করতে সক্ষম হবেন। কারণ, উনার হৃদয়ও হিমালয়সম। জানেন তো, একজন পরিচালকই একটি সিনেমার সর্বেসর্বা। এর বাইরে তৃতীয় কোন ব্যক্তি এর ব্যাপ্তির বিষয়টি কখনই বুঝবে না।

হে কল্যাণীয়াসু,

দয়া করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ’ডুব’ এর প্রতি কল্যাণময়ী দৃষ্টিতে তাকান। ’ডুব’ এর বিরোধিতা থেকে সরে আসেন। ইহা একটি চলচ্চিত্র মাত্র, এখানে খারাপ চরিত্রে রূপদানকারী সকলেই যেমন খারাপ নয়; তেমনি শুভ্রতার চরিত্রে রূপদাকারী সবাই শুভ্র না। এসব আপনি আমাদের থেকে ভালোই জানেন। একটি চলচ্চিত্রের কিছু বিব্রতকর মুহূর্তের আলোকে (যদি থেকেও থাকে) হুমায়ূন আহমেদের বিশালতাকে হারিয়ে দিয়েন না। প্লিজ…

একটি চলচ্চিত্রের প্রতি এই রকম বালিকাসুলভ আচরণ হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কারো কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের প্রতিটি সদস্য তার মতোই বট বৃক্ষের শীতল ছায়ার পরশে রাখবেন ’ডুব’কে।

বিশ্বাস করেন, উপর থেকে হুমায়ূন আহমেদ দেখতে পেলে লজ্জা পাবেন। ভাববেন- ঘটনা কি! এমনতো হবার কথা না! বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পাশে উদারভাবে দুহাত তুলে দাঁড়াতে আজ ’কোথাও কেউ নেই’!!!

Leave A Reply

Your email address will not be published.