শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সুপার এইটের পথ সহজ করা। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লিটন-শান্ত-সাকিব-রিয়াদরা। তাই পরের রাউন্ডে যেতে হলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। কারণ, বাংলাদেশের পরের রাউন্ড আটকানোর সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী এই ডাচরা।
এমন সমীকরণের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটের দিকে এক পা এগিয়ে রাখলো বাংলাদেশ দল। টসে হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ১৫৯ রান। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেমেছে নেদারল্যান্ডস। এতে ২৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এই জয়ে বাংলাদেশের সুপার এইটের পথ অনেকটাই সুগম হলো। ‘ডি’ গ্রুপ থেকে আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে দ. আফ্রিকা। ৬ পয়েন্ট তাদের। ৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন দুইয়ে বাংলাদেশ। ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ডাচরা। শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। সেখানে বাংলাদেশই ফেবারিট। আর নেদারল্যান্ডস খেলবে ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা শ্রীলংকার বিপক্ষে। তাছাড়া রান রেটও কথা বলছে বাংলাদেশের পক্ষে।
কিংসটাউনে এদনি ১৬০ রান তাড়া করতে নামা নেদার্যান্ডসের প্রথম উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২২ রান পর্যন্ত। ৩২ রানে আরও এক উইকেট হারায় দলটি। তাসকিন আহমেদের পর দ্বিতীয় উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব। তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে ওঠে বিক্রমজিৎ সিং ও সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট। এই দুজনের ৩৭ রানের জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। স্টাম্পিংয়ে বিদায় করেন বিক্রমজিৎকে (১৬ বলে ২৬)।
৬৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেওয়ার চোখ রাঙানি দেন এঙ্গেলব্রেখট ও ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। দলকে এই দুজন নিয়ে যান ১১১ রান পর্যন্ত। এরপরই রিশাদের সেই স্বপ্নের ওভার। ১৫তম ওভারে ফিরিয়ে দেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এঙ্গেলব্রেখট (২২ বলে ৩৩) ও মারকুটে ব্যাটার বাস ডি লিডকে। শঙ্কাও অনেকটা সেখানেই উড়ে যায়।
১৭তম ওভারে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় মোস্তাফিজুর রহমানের ওভার। এই ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে কাটার মাস্টার তুলে নেন এডওয়ার্ডসের (২৩ বলে ২৫) উইকেট। শেষ পর্যন্ত এই বিপর্যয় আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারানো ডাচরা থামে ১৩৪ রানে। ২৫ রানের জয় নিয়ে পোক্ত হয় বাংলাদেশের সুপার এইটের আশা।
বল হাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার রিশাদ। ৪ ওভারে ৩৩ রানের বিনিময়ে এই লেগ স্পিনারের উইকেট ৩টি। ২টি উইকেট নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ, মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম। ৪ ওভারে মোস্তাফিজ এদিন দিয়েছেন মাত্র ১২ রান।
এর আগে বৃষ্টিতে দেরিতে শুরুটা হওয়া ম্যাচে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ডাচরা। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি বাংলাদেশের। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ওপেনিংয়ে নেমেও হতাশ করেন। ফিরে যান মাত্র ১ রান করে। এরপর ২৩ রানে লিটনকে হারায় বাংলাদেশ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচিত হওয়া সাকিব আল হাসান এদিন দায়িত্ব নিয়েছেন। তানজিদ তামিমের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলেছেন। তানজিদ ২৬ রান করে ৩৫ রানে ফিরলেও ইনিংস শেষ করে এসেছেন সাকিব। মাঝে তাকে সঙ্গ দিয়েছিল মাহমুউল্লাহ। ২১ বলে ২৫ রান করেন তিনি। শেষ দিকে জাকের আলি ৭ বলে ১৪ রান করেন। অন্যদিকে সাকিব ৪৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশর সংগ্রহটাকে ৫ উইকেটে ১৫৯ এ নিয়ে যান। যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ে ভূমিকা রেখেছে।