মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটদের অভিসংশন তদন্তে প্রথম প্রকাশ্য শুনানি শুরু হয়েছে।মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটি বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১১ টার দিকে এ শুনানি শুরু করে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে কথিত দুর্নীতির তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়েছিলেন তিনি।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন যেন তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন, সে জন্যই ওই চাপ প্রয়োগ করেছিলেন ট্রাম্প।
ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক উইলিয়াম টেইলর ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জর্জ কেন্টের সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হয় । শুক্রবার ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি ইভানোভিচ সাক্ষ্য দেয়ার কথা রয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জিলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন। জো বাইডেনের ছেলে ইউক্রেনের গ্যাস কোম্পানি বুরিসমায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন।
ট্রাম্পের মতে, ওই কোম্পানিতে থাকার সময় বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এবং বাইডেন ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেই দুর্নীতির তদন্ত বন্ধ করেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ওই তদন্ত আবারও শুরু করতে চাপ দেন ট্রাম্প এবং চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে তিনি ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন।
গত সেপ্টেম্বরে সিআইএ’র সাবেক এক কর্মকর্তা ট্রাম্পের ফোনালাপ ফাঁস করে দেন। এতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তবে ট্রাম্প জানান, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। এরপরে এই অভিশংসনের তদন্তের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
বুধবারের শুনানিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে বিস্তারিত শুনতে অভিশংসন তদন্তের নেতৃত্বে থাকা হাউজ ডেমোক্র্যাটরা তিন মার্কিন কূটনীতিককে ডেকে পাঠান। তাদের তিনজনই এর আগে রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে সাক্ষ্য দিতে এসে ইউক্রেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনকলের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
ঐতিহাসিক এ শুনানি অধিবেশনের উদ্বোধন করেন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডাম শিফ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে শিফ বলেন, অভিশংসন তদন্তে যে প্রশ্ন উঠেছে তা হচ্ছে, ট্রাম্প মিত্রদেশটির দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে এবং আমাদের নির্বাচনে ইউক্রেইনকে হস্তক্ষেপ করাতে চেয়েছিলেন কিনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কেবল প্রেসিডেন্সির ভবিষ্যৎ নয় বরং খোদ প্রেসিডেন্টের ভবিষ্যতেও প্রভাব ফেলবে বলে শিফ উল্লেখ করেন।
চলমান এ তদন্তে ইতিমধ্যে কংগ্রেসে সাক্ষ্য দিয়েছেন জর্জ কেন্ট, মেরি ইভানোভিচ ও উইলিয়াম টেইলর। এবার তারা জনসম্মুখে সাক্ষী দেবেন এবং তাদের ধারণা, জনসম্মুখে শুনানি হলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদ হারাতে পারেন।