জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’র সঙ্গে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ যোগ করা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর আজ সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রুল জারি করেন।
জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’র সঙ্গে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ যোগ করে এ সংক্রান্ত গেজেট সংশোধন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, শিক্ষা সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূইঁয়াসহ ১৩ আইনজীবী এ রিট করেন। এর আগে জয় বাংলার সঙ্গে জয় বঙ্গবন্ধু যোগ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিবাদীরা সে নেটিসে সাড়া দেননি। পরে গত বছর ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূইঁয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জয় বাংলার সঙ্গে জয় বঙ্গবন্ধু একসঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে দাবি করে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূইঁয়া পরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই চেতনা থেকেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং জয় বঙ্গবন্ধু আলাদা কোনো স্লোগান না।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘২০১৬ সালের ৩ মে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে হাইকোর্ট বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। এই দেশটি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের সময় সবার মুখে মুখে স্লোগান ছিল এক নেতা একদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। সুতরাং জয় বাংলা থেকে জয় বঙ্গবন্ধু বিচ্ছিন্ন কোনো স্লোগান হতে পারে না।’
এর আগে জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করতে হাইকোর্টে রিট করে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বশির আহমেদ। ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর এ নিয়ে রুল জারির পর ২০২০ সালের ১০ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত। পরে গত বছর ২ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাংবিধানিক পদাধিকারী ব্যক্তি, দেশে ও দেশের বাইরে কর্মরত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব জাতীয় দিবস উদ্যাপন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বা সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করবেন। এ ছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শেষে এবং সভা-সেমিনারে বক্তব্যের শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করবেন।