জ্বালানি তেল ও সারসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ দেশের বামপন্থী দলগুলো। ইতোমধ্যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আগামী ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমূখে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট সিপিবি কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ৯ বামদলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়।
সভায় যার যার অবস্থান থেকে জ্বালানি তেল-সারসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও জনজীবনের সংকট অবসানের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলায় ঐক্যমত পোষণ করা হয়। বৈঠকে শাহবাগে ছাত্র-মিছিলে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার নিন্দা ও ছাত্র নেতাদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় এবং হামলাকারী পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করা হয়। সম্প্রতি বাস ডাকাতি এবং বাসসহ বিভিন্ন এলাকায় দলবদ্ধ নারী ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এর আগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের বামপন্থী দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানায়। দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। গত ৬ ও ৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে আলোচনাকালে জ্বালানি তেল ও সারসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভায় হরতাল অবরোধের কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তাব আসে। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শেষে বিষয়টি নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ অন্যান্য বামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর ৮ আগস্ট বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় একই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়। সময়ের মধ্যে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার না হলে ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমূখে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। একই দিনে জেলায় জেলায় ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। বাম জোট ও ৯ বাম দলের যৌথসভা থেকেও কর্মসূচির প্রতি একাত্ম প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া যুগপৎভাবে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই কর্মসূচির সঙ্গে বাম ধারার রাজনৈতিক দলসহ প্রগতিশীল অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।