The news is by your side.

জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তে সৌদির উপর ক্ষুব্ধ বাইডেন প্রশাসন

0 165

 

বুধবার ভিয়েনায় ওপেক প্লাস জোটের বৈঠকে তেলের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের প্রধান তেল উৎপাদক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এতে পশ্চিমা দুনিয়ায়, বিশেষ করে আমেরিকায় উদ্বেগ এবং ক্ষোভ তৈরি করেছে।

বাইডেন প্রশাসন সঙ্গে সঙ্গেই তাদের ক্রোধের প্রধান লক্ষ্যবস্তু করেছে সৌদি আরবকে। কারণ যদিও রাশিয়াও এই জোটের অন্যতম প্রধান সদস্য- কিন্তু বিশ্বের এক নম্বর তেল উৎপাদক হিসাবে সৌদিরাই ওপেক প্লাসের যে কোনো সিদ্ধান্তের প্রধান নিয়ন্তা।

অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক ওপেক প্লাস জোটের সিদ্ধান্তকে পশ্চিমাদের প্রতি, বিশেষ করে আমেরিকার প্রতি, চপেটাঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা শুরু করেছেন।

মার্কিন কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিকও খোলাখুলি বলেছেন, ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে দলাদলিতে রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে সৌদি আরব।

ওপেকের সিদ্ধান্ত জানার পরপরই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক ব্রায়ান ডিজ এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট খুবই হতাশ।

ঐ একই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওপর ওপেকের নিয়ন্ত্রণ খাটো করতে কী কী করা যেতে পারে – তা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার কথা বলবে।

ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে তাদের এক রিপোর্টে বলেছে বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে জ্বালানি তেলের বাজারে সৌদি প্রভাব কমানোর উপায় খোঁজা শুরু করেছে।

বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ লোকজন মিডিয়ায় বলছেন কংগ্রেসের উচিৎ এমন আইন করা যাতে ওপেক সদস্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করা যায়।

কংগ্রেসের বেশ কজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সদস্য সৌদি আরবকে লক্ষ্য করে খোলাখুলি হুমকির সুরে কথা বলছেন।

প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য টম মালিনোস্কি এবং শন ক্যাসটেন বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন সৌদি আরব “শত্রুর” মত আচরণ করেছে।

তারা এমন একটি বিল উত্থাপনেরও হুমকি দিয়েছেন যাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সৌদি আরব থেকে ৩ হাজার মার্কিন সৈন্য এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা প্রত্যাহার করতে হবে।

তারা বলেন, এখন থেকে আমেরিকাকে পরাশক্তির অবস্থান থেকেই উপসাগরে নির্ভরশীল দেশগুলোর সাথে আচরণ করতে হবে। অর্থাৎ তারা বলতে চেয়েছেন অনুরোধ বা সুপারিশ নয়, আমেরিকাকে তাদের স্বার্থ আদায় করে নিতে হবে।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা সামির হাশমি বলছেন, ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্ত শুধু তেলের বাজারের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ তা নয়, এর ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বও অনেক।

কারণ, জ্বালানি তেল থেকে রাশিয়ার আয় কমানোর যে প্রাণান্তকর চেষ্টা পশ্চিমারা করছে – ওপেকের সিদ্ধান্তে তা অনেকটাই ভেস্তে যেতে পারে।

ডেমোক্র্যাট সেনেটর ক্রিস মার্ফি সিএনবিসি টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের রিয়াদ সফরে কোনো লাভ হয়নি … সৌদিরা শেষ পর্যন্ত আমেরিকার বদলে রাশিয়ার পক্ষ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” তিনি বলেন।

নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগে ওপেকের এমন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবেও বাইডেন প্রশাসন এবং ডেমোক্র্যাট দলকে কিছুটা বিপদে ফেলে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে তারা। তেলের দাম বাড়লে সেই চেষ্টা হুমকিতে পড়তে পারে।

ফলে, ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, মার্কিন প্রশাসনের অনেকেই মনে করছেন এসময় তেলের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃত উসকানি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.