গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের অন্তিম মুহূর্তে মার্তিনেজ ওই অবিশ্বাস্য সেভটি না করলেই তো গল্পটা অন্যরকম হয়ে যেত। শুধু ফাইনালেই নয়, পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই গোলপোস্টের নিচে আস্থার প্রতীক হয়ে ছিলেন মার্তিনেজ। বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার এসেছে তারই স্বীকৃতি হয়ে। বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা ভক্তদের কাছেও তাই নায়কের আসনে আসীন খ্যাপাটে এই গোলরক্ষক। সেরা গোলরক্ষকের ট্রফি হাতে তাঁর বিতর্কিত উদযাপনও যাঁকে আলোচনায় রেখেছে অনেকদিন।
সেই এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে চর্মচক্ষে দেখার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। আগামী ৩ জুলাই মার্তিনেজের ঢাকায় আসা একরকম নিশ্চিতই বলা যায়। সেই আসাটা মার্তিনেজের নিজের আগ্রহেই। কলকাতার ক্রীড়া উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত শুধু কলকাতায় আনার জন্যই যোগাযোগ করেছিলেন মার্তিনেজের সঙ্গে। কলকাতার সঙ্গে ঢাকা যোগ হচ্ছে মার্তিনেজের নিজের আগ্রহে। এর আগে এই শতদ্রু দত্তর উদ্যোগেই কলকাতা ঘুরে গেছেন ফুটবলের দুই অমর চরিত্র পেলে ও ম্যারাডোনা। গত নভেম্বরে বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক কাফুও। মার্তিনেজের আসন্ন কলকাতা সফরের সব বন্দোবস্তও তিনিই করছেন।
৪ ও ৫ জুলাই কলকাতায় থাকবেন মার্তিনেজ। মোহনবাগান ক্লাবে যাবেন, মালা পরাবেন ম্যারাডোনার ভাস্কর্যে, বলে লাথি মেরে উদ্বোধন করবেন একটা ফুটবল ম্যাচের—কলকাতায় মার্তিনেজের দুই দিনের সফরসূচিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে এরই মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে দেখা করাও যার অন্তর্ভূক্ত। এরই মধ্যে মমতার জন্য উপহার হিসেবে সই করে নিজের একজোড়া গ্লাভস পাঠিয়েছেন মার্তিনেজ। ভিডিও বার্তায় সৌরভকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করেছেন।
কলকাতা সফর চূড়ান্ত হওয়ার পর মার্তিনেজ নিজেই শতদ্রুকে বাংলাদেশেও আসার ইচ্ছার কথা জানান। আজ সকালে কলকাতা থেকে ফোনে শতদ্রু দত্ত সেকথা জানিয়ে বললেন, ‘মার্তিনেজের বাংলাদেশে আসতে খুব আগ্রহ। আমি শুধু কলকাতায় আনার জন্যই ওর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ও নিজে থেকেই বলল, ”আমি বাংলাদেশেও যেতে চাই। ওখানে আমার ও আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অনেক ভক্ত আছে।” এরপর আমি বাংলাদেশেও বিভিন্ন স্পনসর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করি।’
এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে ঢাকার আনতে বেশ কটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শতদ্রু দত্তর আলোচনা চলছে। কাজ চলছে ঢাকায় তাঁর কার্যক্রম চূড়ান্ত করা নিয়েও। আপাতত ঠিক হয়ে আছে, ৩ জুলাই ভোরে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ঢাকায় নামবেন। সেই দিনটা ঢাকায় থেকে পরদিন সকালে যাবেন কলকাতায়।
এর আগে ২০১১ সালে ঢাকায় ঘুরে গেছেন লিওনেল মেসি। এমিলিয়ানো মার্তিনেজের মতো তা একার সফর ছিল না। ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নাইজেরিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল আর্জেন্টিনা। মেসি এসেছিলেন সেই আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক। এমিলিয়ানো মার্তিনেজ তখন অবশ্য জাতীয় দলের ধারেকাছেও ছিলেন না। আর্জেন্টিনা দলে তাঁর অভিষেকই তো ২০১১ সালের জুনে।