জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান যেমন খুনিদের ‘পুরস্কৃত’ করেছিলেন, তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে ‘একই ঘটনা ঘটিয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার এক আলোচনাসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’ এ আলোচনাসভার আয়োজন করে। সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই সভায় প্রধানমন্ত্রী যুক্ত হন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া যেমন জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে জড়িত, জাতীয় চার নেতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত, একের পর এক ক্যু করে সেনাসদস্যদের হত্যা করেছে, মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করেছে… খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ঠিক একই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
‘জিয়াউর রহমান যেমন সেই আবদুল আলিম থেকে শুরু করে মাওলানা মান্নান থেকে শুরু করে শাহ আজিজ থেকে শুরু করে, তাদেরকে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং উপদেষ্টা বানিয়েছিল, একইভাবে আমরা দেখেছি খালেদা জিয়া সেই নিজামী থেকে শুরু করে, যারা যারা একেবারে সরাসরি বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে মন্ত্রী বানিয়েছিল; খুনি রশীদ এবং হুদা- তাদের ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে এনে বিরোধী দলের নেতার আসনে বসায়।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “৪৫ বছর পার হয়ে গেছে। এটা ভাবতে আমাদের অবাক লাগে। যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিলেন, মুক্তি এনে দিলেন, আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিলেন, একটা জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা এনে দিলেন, তাকেই হত্যা করা হয়েছিল এ দেশের মাটিতে।
“বারবার মৃত্যুর মুখে তিনি পড়েছেন। কিন্তু কখনো কোনো মতেই জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, জাতির জন্য তিনি যে কিছু করতে চেয়েছেন, এই বাঙালি জাতির জন্য তিনি জীবনকে যে উৎসর্গ করেছিলেন, তার আদর্শ সামনে নিয়েই তিনি এগিয়ে গেছেন। কখনো পেছন ফিরে তাকাননি, মৃত্যুকে পরোয়া করেননি। জেল-জুলুম অত্যাচার কোনো কিছুর তিনি পরোয়া করেননি।”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে দেশকে পরিচালনা করছিলেন, তখন প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে- আমাদের দলের অভ্যন্তরে নানা খেলা শুরু হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের লেখনী এবং কার্যকলাপ ছিল, (দৃশ্যত) পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতার জনপ্রিয়তা নস্যাৎ করা। কিন্তু তারা যখন সেটা পারেনি, তখন হত্যার পথ বেছে নেয়।’