ছাত্রদল যত অপকর্ম করে গেছে সেটা নিয়ে কথা নেই, কিন্তু ছাত্রলীগের একটু হলেই বড় নিউজ। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমি জানি ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক কথা লেখা হয়। এত বড় একটা সংগঠন, আমরা ক্ষমতায় আছি বলে অনেকেই এর ভেতরে ঢুকে যায়। ঢুকে নিজেরাই গোলমাল করে, বদনামটা ছাত্রলীগের ওপর পড়ে। ছাত্রলীগেও সংগঠন করার সময় গ্রুপ বাড়ানোর জন্য এই রকম আলতুফালতু লোক দলে ঢুকাবে না। এতে নিজের বদনাম, দলের বদনাম, দেশের বদনাম।’
বলেন, ‘৭৫ এর পরে তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, বোমাবাজি। আমরা সেখান থেকে ঘুরিয়ে আনতে পেরেছি। শিক্ষার বিভিন্ন পরিবর্তন এনে আধুনিকায়ন করেছি। প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতি উপজেলায় স্কুল সরকারি করে দিচ্ছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি, উপবৃত্তি দিচ্ছি, উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদা ট্রাস্ট ফান্ড করেছি। আমাদের স্বাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন বলল, ছাত্রদল দিয়েই নাকি আওয়ামী লীগকে সোজা করে দিবে। তাদের হাতে যে অস্ত্র, এটা তো জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া। আমি ছাত্রলীগের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিলাম, আগে লেখাপড়া শিখতে হবে। কারণ শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিকে কেউ সেবা দিতে পারে না।’
৩২ নম্বরের বাড়িতে ওঠার সময়কার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংসারের কি কি দরকার তা মা নিজে ব্যবস্থা করতেন। তিনি গরু পালতেন, ছাগল পালতেন, মুরগি, হাঁস, কবুতর এবং সবজি, সব ওই বাড়িতে উৎপাদন করাতেন। যাতে বাজারে বেশি খরচ করাতে না হয়।’
১৫ আগস্টে ঘটনার সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আব্বা দেখলেন, সেই চেনামুখগুলো এসেছে ঘাতকের বেশে। তখন ওনার ভেতরে কী হচ্ছিল আমি জানি না।
‘৬ বছর দেশে আসতে পারিনি। জিয়াউর রহমান আমাকে আসতে বাধা দিয়েছে। যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলাম, ফিরে এলাম, তখনও কিন্তু আমাকে ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। আমি যে মিলাদ পড়ব, সেটার সুযোগ জিয়াউর রহমান আমাকে দেয়নি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
‘আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি আমি, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কেমন হবে, ২১০০ সালের ডেলটা প্লান প্রণয়ন করে দিয়েছি। যারা আগামীতে আসবে তারা এগুলো অনুসরণ করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।’
করোনাকালে ছাত্রলীগের কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, লেখাপড়া শিখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি চাই। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে, তার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে প্রজন্ম তাদের প্রস্তুত করবে। দেশ চালাতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজন আছে, শিক্ষার প্রয়োজন আছে। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হবে।’