গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে, তা বাস্তব পরিস্থিতির সাথে মেলে না। (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এখন একটি রাজনৈতিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে যা নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একধরনের মোহ সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এমন মতামত দিয়েছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রবৃদ্ধির হিসাব অতিরঞ্জিত করে লাভ নেই। এটা নীতিনির্ধারণে সহায়তা করবে না। তিনি মনে করেন, তথ্য–উপাত্ত সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান বিবিএসের স্বাধীনতা দিন দিন খর্ব করা হচ্ছে। ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিবিএসের দেওয়া জিডিপির প্রাক্কলন করোনার প্রভাব তেমনভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
গত সপ্তাহে বিবিএস বলেছে, গত অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে অর্থনীতিতে কোনো প্রবৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়, নিশ্চিতভাবে আগের অর্থবছরের চেয়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম কম হয়েছে। এর আগের ৯ মাসে যদি ১১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় তাহলে পুরো অর্থবছরে বিবিএসের ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হিসাবের সাথে খাপ খায় । কিন্তু আগের ওই ৯ মাসে বিনিয়োগ, রপ্তানি, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রভৃতি নির্দেশক দুর্বল ছিল। ফলে এত বেশি আকারে অর্থনীতি বাড়ার কথা নয়। প্রবৃদ্ধির এই হিসাব বাস্তবতার সঙ্গে মিলছে না। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী , করোনার মধ্যেও ব্যক্তি বিনিয়োগ গতবারের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে, যা নীতিনির্ধারকদের ভুল বার্তা দিচ্ছে। এত বিনিয়োগ হলে তো ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা রাখার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার দরকার হতো না।
সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।