জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ডের জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ১০০ বছর আগের ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে তিনি ব্রিটিশ-ভারতের ইতিহাসে ‘কলঙ্কের দাগ’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল পঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগে একটি প্রতিবাদ সভায় জেনারেল ডায়ার বিনা প্ররোচনায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকারের হিসেবে অনুযায়ী, নিহত হয়েছিলেন নারী, পুরুষ, শিশু-সহ ৩৭৯ জন, আহত হয়েছিলেন অন্তত ১২০০ জন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ‘নাইটহুড’ ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ বছর ওই হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর।
হাউস অব কমন্সে সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তরের সময় জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন টেরেসা। তিনি বলেন, ‘‘১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে কলঙ্কের দাগ। ১৯৯৭ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগ সফরের আগে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ বলেছিলেন, ওই ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে বেদনার উদাহরণ। ওই হত্যাকাণ্ড এবং তার ফলের জন্য আমরা গভীর ভাবে দুঃখিত। তবে আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, সহযোগিতা, অংশীদারি, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তার উপরেই আজ ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্রিটিশ সমাজে প্রবাসী ভারতীয়দের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।’’ বিরোধী নেতা লেবার পার্টির জেরেমি করবিন বলেন, ‘‘জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘটনার নৃশংসতার জন্য এবং যাঁরা সে দিন নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’ এর আগে এক ব্রিটিশ এমপি দাবি করেছিলেন, জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি-রাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। লেবার পার্টির এমপি প্রীত কৌর গিল বলেন, ‘‘ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ব্রিটিশ সরকারের আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা চাওয়া জরুরি ছিল।’’ লেবার পার্টির আর এক এমপি বীরেন্দ্র শর্মাও মনে করেই, ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমা চাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।
হাউস অব কমন্সের একটি কমিটি রুমে গত কাল জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ঠিক হয়, ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য কোনও ক্ষমা চাওয়া হবে না।