The news is by your side.

জামায়াতের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র,   বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

0 108

জামায়াতে ইসলামীর ‘মানবাধিকার’ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন অধিকারকর্মী, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পী ও সাংস্কৃতিককর্মীসহ বিশিষ্টজনেরা।

এক বিবৃতিতে তারা জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের স্বৈরশাসকরা তাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিত্র মার্কিনিদের সহায়তায় নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। যেখানে তারা পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য বর্বোরচিত হত্যাকাণ্ডের অধ্যায়ের জন্ম দেয়। হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে ১৫ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয়ের সময় পর্যন্ত ৩০ লাখ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা ও ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমহানি করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের সেই বর্বোরতার সাক্ষ্য এখনও বহন করছে বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদ। সারা দেশে পাকিস্তানি বর্বরদের সহযোগী হিসেবে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী ও তাদের সহযোগী ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতৃত্বে গড়ে উঠে আল-বদর, আল-শামস, রাজাকার বাহিনী। তারা সেসময় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারী-ধর্ষণের মতো জঘন্য মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘঠিত করে এক কোটির বেশি বাঙালিকে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের অনুসারী-অনুগত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী এখনও এই দেশের ঘৃণিত জামায়াত ও পাকিস্তানের পক্ষে রয়েছে।

বলা হয়, সাম্রাজ্যবাদী মার্কিনি ও পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের এই জঘন্য অপরাধের বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। বিজয়ের প্রাক্কালে এই শক্তির নীল নকশা অনুযায়ী দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, পেশাজীবীদের হত্যা করে তারা চিরতরে বাঙালির ইতিহাস মুছে দিতে চেয়েছে।

বিবৃতিতে তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীসহ সব ধর্মান্ধ রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন।

এছাড়া পাকিন্তান থেকে বাংলাদেশের সমূদয় পাওনা বর্তমান বাজার মূল্যে ফেরত আনারও দাবি জানান তারা। এতে ১৯৭১ সালে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের কর্মতৎপরতা জোরদার করার দাবিও জানান বিশিষ্টজনরা।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে থাকা জামায়াতে ইসলামীর গণতন্ত্রবিরোধী ফ্যাসিস্ট দল। ২০১৩ সালে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে বাংলাদেশের উচ্চতর আদালত। ফলে দলীয় পরিচয়ে জামায়াতের নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তবে সরকার কখনও জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেনি। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে ’৭১-এর গণহত্যার জন্য দায়ী বলেও উঠে এসেছে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্ট্রি ডা. সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বিএমএর সাবেক সভাপতি ডা. রশীদ-ই মাহবুব, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি  ডা. ফওজিয়া মোসলেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী ও সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. সেলু বাসিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জোবায়দা নাসরিন কনা, সমাজ কর্মী এম এ সামাদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি কাজল দেবনাথ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, উঠোন সাংস্কৃতি সংগঠনের সভাপতি অলক দাশগুপ্ত, আনন্দন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ক এ কে আজাদ, খেলাঘরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, শিক্ষক নেতা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.